বিদ্যালয়ের মাঠে কাটা গাছ

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ভাটিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এক আওয়ামী লীগ নেতা কাটা গাছ রেখেছেন
ছবি : প্রথম আলো

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভাটিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক আওয়ামী লীগ নেতা এক মাসের বেশি সময় ধরে কাটা গাছ স্তূপ করে রেখেছেন। ফলে মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলতে পারছে না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই আওয়ামী লীগ নেতা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য। তিনি গাছ রাখার জন্য বিদ্যালয়ের কারও অনুমতি নেননি।

ভাটিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মোগলহাট ইউনিয়নে অবস্থিত। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, লালমনিরহাট-ভাটিবাড়ি-মেঘারাম-মোগলহাট আঞ্চলিক সড়কের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন দরপত্রের মাধ্যমে সড়কের দুই পাশের গাছ কেটে নেওয়ার কাজ করছেন। কাটা গাছ তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে রাখছেন। আনোয়ার হোসেন মোগলহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যও।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে সীমানাপ্রাচীর নেই। মাঠজুড়ে কাটা গাছ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কাঠের ছোট-বড় টুকরো ছড়িয়ে আছে। মাঠে খেলার কোনো পরিবেশ নেই। ভাটিবাড়ি গ্রামের তিনজন ব্যক্তি বলেন, শুধু বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা নয়, গ্রামের ছেলেমেয়েরাও এ মাঠে খেলে। আনোয়ার হোসেন তাঁর ক্ষমতা দেখিয়ে এমন কাজ করেছেন।

ভাটিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতী রানী সরকার বলেন, গাছ রাখার বিষয়টি সভায় আলোচনা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে তাঁকে (আনোয়ারকে) গাছের কাটা খণ্ডগুলো মাঠ থেকে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি লালমনিরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ের মাঠটি লালমনিরহাট-মোগলহাট আঞ্চলিক পাকা সড়ক দ্বারা বিভক্ত এবং মাঠটির কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। এই সুযোগ অনেকে মাঠটি অযাচিত ব্যবহার করে। সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হলে এমন সমস্যা হবে না।

এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি আঞ্চলিক সড়কের সম্প্রসারণের জন্য দুই পাশের গাছ কেটে নেওয়ার কাজ করছেন। কাটা গাছগুলো বিক্রি করার জন্য ভাটিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রেখেছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেগুলো সরিয়ে নিতে বলেছে। যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে মাঠটির এই সমস্যা দূর না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।