বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি
সাতক্ষীরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম আবদুর রাজ্জাক ও তাঁর পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় ঘোষণা দেওয়া হয়, অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বাধ্য হবে কর্মসূচি দিতে।
শনিবার বেলা একটার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম আবদুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা বি এম আবদুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, শহরের সুলতানপুর এলাকার আবদুর রহিম ওরফে বাবু একজন নব্য সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। বর্তমানে সুলতানপুর এলাকার অনেক সম্মানী মানুষ সন্ত্রাসী রহিমের কাছে অসম্মানিত হচ্ছেন। নির্যাতন ও মারপিটের শিকার হচ্ছেন। কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তিনি তাঁর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য একটি বাহিনী তুলেছেন।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ৪ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে শহরের বড় বাজারে তাঁর গুদামে সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার আনিছুর রহমানের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে আবদুর রহিমের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রহিম ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকেরা তাঁকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। এ সময় তিনি, তাঁর ছেলে সামিউল হাসান, শ্যালক শেখ তহিদুজ্জামান ও শ্যালকের ছেলে তামজিদুজ্জামান গোলযোগ ঠেকাতে সেখানে গেলে রহিম ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় তিনি, তাঁর ছেলে, শ্যালক ও শ্যালকের ছেলে গুরুতর আহত হন। অথচ মামলা সাজানোর জন্য রহিম তাঁর নিজের ভাইপোকে ছুরিকাঘাত করে তাঁদের (আবদুর রাজ্জাক) ওপর দোষারোপ করেছেন।
আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার পরদিন তাঁর শ্যালক শেখ তহিদুজ্জামান বাদী হয়ে আগেই সদর থানায় মামলা দেন। তবে রহিমের দেওয়া মামলা আগে রেকর্ড করা হয়। এ মামলার তিন দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ রহিমসহ তাঁর বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মশিউর রহমান বলেন, আবদুর রহিম বড় বাজারে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তাঁর লোকজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধর করেছেন। কিন্তু মামলা দিতে গেলে পুলিশ নিতে গড়িমসি করেছে। আবার যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁদের মামলা নেওয়া হয়েছে একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির চাপে। এটি দুঃখজনক। করোনা পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারছে না। অবিলম্বে সন্ত্রাসী রহিম ও তাঁর বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সদর উপজেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান, রফিকুজ্জামান প্রমুখ।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে আবদুর রহিম বলেন, তাঁর ও তাঁর ভাইপোর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার আনিছুর রহমানের কাছে আমি ১৫ হাজার টাকা পাই। তিন বছরের বেশি সময় ধরে তিনি টাকা না দিয়ে আত্মগোপন করে আছেন। ৪ আগস্ট তহিদুজ্জামানের বাড়ির সামনে আনিছুরকে পেয়ে তাঁর কাছে আমি পাওনা টাকা চাই। এ সময় তহিদুজ্জামানসহ তাঁর ছেলে, ভগ্নিপতি, ভাগনেসহ ৮-১০ জন আমার ওপর হামলা চালান। এ সময় আমার ভাইপো ইসরাফিল ঠেকাতে আসে। একপর্যায়ে তহিদুজ্জামান আমার ভাইপো ইসরাফিলকে ছুরিকাঘাত করেন। বর্তমানে তিনি খুলনায় চিকিৎসাধীন।’