বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেরিঘাটে যাত্রীর ঢল
ঈদের পর থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ কমছে না মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে। আজ শনিবার সকালে যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাগামী যাত্রীদের ঢল নামে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষকে।
বাংলাবাজার ফেরিঘাট থেকে শিমুলিয়া ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতেই গাদাগাদি করে পারাপার হচ্ছে মানুষ। প্রচণ্ড রোদ আর ভ্যাপসা গরম থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকার পরও ঘাটে আসা বেশির ভাগ যাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। ফলে করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটে মানুষের স্রোত কিছুতেই কমছে না। শনিবার সকালে ঘাটে যাত্রীদের চাপ কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়তে থাকে আর যাত্রীদের চাপও বাড়তে থাকে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে প্রতিটি বড় ফেরিতে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার যাত্রী আজ পার হয়েছেন। ছোট ফেরিতেও হাজারের ওপরে যাত্রী। ঢাকাগামী যাত্রীর চাপ না কমায় জরুরি যানবাহনও ফেরিতে তুলতে সমস্যা হচ্ছে।
সালাউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘ঢাকাগামী যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকায় আমরা চলাচলরত ১৮টি ফেরি চালু রেখেছি। যানবাহনের তুলনায় যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। কোনো প্রকার দুর্ঘটনা এড়াতে ঘাটে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম, আনসার, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদের ১০ দিন আগে ও ঈদের এক দিন পর থেকে ঘাটে পদ্মা পারাপারের জন্য যানবাহনের তুলনায় যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। পদ্মা পারাপারের জন্য যাত্রীদের ঘাটে এসে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় ঘাটে আসা জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ও ব্যক্তিগত গাড়ি ফেরিতে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে।
খুলনা থেকে আসা ঢাকামুখী যাত্রী সাজ্জাদ হাওলাদার বলেন, ‘গরম আর প্রচণ্ড রোদে শেষ আমরা। ঘাটে একটু ছায়া নেই। বসার মতো জায়গাটুকু নেই। রোদের মধ্যে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে আমার চোখের সামনেই অনেকেই মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন।’ বরিশাল থেকে আসা ইমরান হোসেন নামের আরেক যাত্রী বলেন, ঘাটে প্রচণ্ড ভিড়। ফেরিতে পা রাখার জায়গা নেই। মানুষের ঠেলাঠেলি আর গরমের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যায় না।
মাদারীপুর থেকে আসা যাত্রী মনির হোসেন বলেন, ঘাটে লঞ্চ চলাচল করলে ফেরিতে এত দুর্ভোগ হতো না। ফেরি সব চললেও মানুষের চাপ কমে না। কারণ, চাহিদা যত, ফেরিতে ততসংখ্যক মানুষ পারাপার হচ্ছে না।
বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে যাঁরা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন, তাঁরা আরও আগেই চলে গেছেন। এখন ঘাটে আসা ঢাকাগামী যাত্রীরা ঈদের এক-দুদিন পর গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁদের ভিড়ই ঘাটে লেগে রয়েছে। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে দিনরাত কাজ করছি।’