ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত

নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ও হাটহাজারীতে মাদ্রাসাছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অগ্নিসংযোগ। শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে সব ধরনের ট্রেনের যাত্রাবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে স্টেশনে ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনায় সিগন্যাল প্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে এই স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার শোয়েব আহমেদ বলেন, রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্বাঞ্চল) কার্যালয় থেকে আজ শনিবার সকালে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্টেশনের সিগন্যাল প্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ যাঁরা এই স্টেশন থেকে যাত্রার জন্য টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি করবে। কাল থেকে অন্যসব ট্রেনের মতো এই ট্রেনেরও যাত্রাবিরতি স্থগিত থাকবে।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কালেক্টর তানিজিম ফরায়েজী প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে তিনটি ট্রেন যাত্রাবিরতি করেছে। তাদের মধ্যে ভোররাত সাড়ে চারটায় ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা, ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল পৌনে নয়টায় এবং নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী নোয়াখালী মেইল সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়েছে।

এদিকে আট ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। রেলের এসব পথের বিভিন্ন স্টেশনে সাতটি ট্রেন আটকা পড়েছিল।

গতকাল মোদিবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসার ছাত্ররা হামলা চালিয়ে দুটি গাড়ি, রেলস্টেশনসহ অন্তত পাঁচটি সরকারি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় আহত হয়ে মো. আশিক (২০) নামের এক তরুণ মারা যান। গতকাল রাতেই তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মোদির বাংলাদেশ সফর এবং ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসাসহ জেলার সব কওমি মাদ্রাসাছাত্ররা সদর থানা অবরোধসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ১৮ থেকে ২৫ বা ২৬ বছর বয়সী সাধারণ যুবকেরাও অংশ নেন। তাঁরা শহরের বিভিন্ন সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করেন। তাঁরা বিকেল চারটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন হামলা ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে তাঁরা স্টেশনে থাকা ট্রেনের সিগন্যাল প্যানেল বোর্ডে আগুন ধরিয়ে দেন। একে একে স্টেশনের সাতটি কক্ষে আগুন দেওয়া হয়। এসব কক্ষের নথিপত্র ও আসবাব বের করে এবং রেললাইনের স্লিপার তুলে রেললাইনের ওপর রেখে আগুন ধরিয়ে দেন।