ভাঙনের মুখে লঞ্চঘাট, ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল

পন্টুন ধরে রাখার লোহার খুঁটি কাত হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে ঘাটটি। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছেন।

পদ্মা নদীতে পানি কমায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের সামনে মাটি ধসে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফেলা বালুভর্তি বস্তাও সরে গেছে। পন্টুন ধরে রাখার লোহার খুঁটি কাত হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে ঘাটটি। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছেন।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে লঞ্চঘাটের পরিস্থিতি দেখতে আসেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম। এ সময় তিনি দ্রুত ঘাটটি সংস্কারের আশ্বাস দেন।

দৌলতদিয়ায় লঞ্চঘাট রয়েছে একটি। গত বর্ষায় পদ্মায় ভাঙন দেখা দিলে লঞ্চঘাটের তিনটি পন্টুনের মধ্যে একটি পন্টুন সরিয়ে নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পানি কমে যাওয়ায় লঞ্চঘাটের দুটি পন্টুন উঁচু হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে ফেলা বালুভর্তি বস্তা ধসে গেছে। যাত্রীদের যাতায়াতের দুটি কাঠের সেতু পন্টুন থেকে আলাদা হয়ে গেছে। ওই সেতুর কয়েকটি স্থানে লোহার পাইপও ভেঙে গেছে।

নদী পাড়ি দিয়ে আসা যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামার পর বিকল্প রাস্তা দিয়ে সড়কে উঠছেন। তবে নড়বড়ে কাঠের সেতুটি দিয়ে অনেক যাত্রী লঞ্চঘাটে নামছেন। কয়েকজন যাত্রী বলেন, পন্টুনের লোহার খুঁটি কাত হয়ে আছে। পন্টুনের পাশে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। এ জন্য তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে পার হচ্ছেন।

ফরিদপুর থেকে আসা তাপস পাল নামের এক যাত্রী বলেন, ‘অনেক দিন পর ঘাটে এসেছি। কাঠের সেতু থেকে চার-পাঁচ ফুট দূরে পন্টুন আলাদা হয়ে রয়েছে। সেতুটির লোহার খুঁটিও ভেঙে ঝুলে আছে। যে কোনো মুহূর্তে পন্টুন ভেসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, বর্ষাকালের আগে লঞ্চঘাট ভালো ছিল। বর্ষাকালে একটি পন্টুনের দুটি খুঁটি পানিতে তলিয়ে যায়। অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন ঠেকাতে ওই সময় বড় আকারের বালুভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। ওই ব্যাগের ভারে নদীর পাড় ধসে পড়ে। চারটি খুঁটির মধ্যে দুটি কাত হয়ে পড়েছে।

আরিচা লঞ্চমালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার বলেন, যাত্রীদের যাতায়াতে ব্যবহৃত দুটি কাঠের সেতুর মধ্যে দুই সপ্তাহ আগে একটি সেতু ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আরেকটি জরাজীর্ণ। এ ছাড়া পন্টুনটি ধরে রাখতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় যেকোনো মুহূর্তে লঞ্চঘাট ভেসে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

গতকাল পরিদর্শন শেষে প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ (গতকাল) দেখে মনে হয়েছে, গত বর্ষায় ভাঙন ঠেকাতে পাউবো যে বড় বড় টিউব ব্যাগ ফেলেছিল, এর ভারে নদীর পাড় ধসে পড়ছে। পন্টুনের নিচ থেকে এবং পন্টুন ধরে রাখার খুঁটির নিচ থেকেও মাটি সরে যাওয়ায় ঘাটটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঘাট দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অনুরোধ করব।’