‘ভোট নিলে নৌকা মার্কার লোকজন নিতে পারবে, পিটিয়ে পিটিয়ে’

শাহ আলম
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে নৌকায় ভোট নেওয়ার ঘোষণা দিলেন কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ আলম। ১৬ মার্চ রাতে হলদিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাতিরঘোনা এলাকায় নির্বাচনের একটি প্রস্তুতি সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শাহ আলম সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও শাহ আলম আগাম মাঠে নেমেছেন। ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্যে সরকার ও পুলিশের কথা এবং নিজের ও তাঁর ভাইয়ের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন। ২০১৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ছিলেন।

শাহ আলম বলেন, ‘সরকার কার? সরকার শেখ হাসিনার, নৌকাও সরকারের। ভোট জোর করে নিতে পারলে, নৌকা মার্কার সরকার পারবে। চেয়ার মার্কা, কলসি মার্কার পক্ষে তা মোটেও সম্ভব না। সরকারি গুন্ডারা কার? পুলিশ সরকারি গুন্ডা, তারা (পুলিশ) হচ্ছে নৌকা মার্কার লোক। ভোট নিলে নৌকা মার্কার লোকজন নিতে পারবে, পিটিয়ে পিটিয়ে। আর সেই নৌকা আমার। নৌকা আমাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে দিতে হবে।’

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরূপ ও অশালীন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি।

প্রকাশ্যে সভায় এ রকম বক্তব্য দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে গতকাল একাধিকবার যোগাযোগ করেও শাহ আলমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

শাহ আলমের এই বক্তব্যে বিব্রত স্থানীয় আওয়ামী লীগও। হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসলাম বলেন, ভোটের আগাম প্রচারণা সভায় বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ আলমের এ রকম বক্তব্যে দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, নৌকার মনোনয়ন কে পাবে, সেটি দলের নির্বাচনী বোর্ড ঠিক করবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর (শাহ আলম) ঘরে এসে নৌকা দিয়ে যাবেন, এমন বক্তব্য শুধু শিষ্টাচারবহির্ভূত নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে তিনি দলীয় প্রধানকে হেয় করেছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইরফান উদ্দিন বলেন, এ ধরনের বক্তব্য নির্বাচন কমিশন সমর্থন করে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হবে।