ভোলায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে তিন দিন ধরে চলছে আন্দোলন

ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবিতে সদর রোডে মঙ্গলবার ১১টায় মানববন্ধন ও পথসভা হয়েছে। সদর রোডের কে-জাহান চত্বরে
প্রথম আলো

ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার দাবিতে চলছে লাগাতার আন্দোলন। তৃতীয় দিন আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এ দাবিতে সদর রোডে মানববন্ধন ও পথসভা হয়। এ সময় বক্তারা জানান, ভোলার গ্যাস ভোলাবাসীকেই দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা গ্যাস ব্যবহার করতে চান। গ্যাস দেওয়া না হলে তাঁরা কঠোর আন্দোলন করবেন।

‘ঘরে ঘরে গ্যাস চাই আন্দোলন কমিটি’—এ আয়োজন করে। আজ কে–জাহান চত্বরে আয়োজিত এ মানববন্ধনে সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষ ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। এর আগে ‘ভোলার গ্যাস ভোলায় চাই! ঘরে ঘরে গ্যাস চাই’—দাবিতে আন্দোলন কমিটির নেতারা দুই দিন ধরে পথসভা, স্মারকলিপি প্রদান, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করেছেন।

আন্দোলন কমিটি সরকারের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হচ্ছে, ডিমান্ড নোট অনুযায়ী টাকা জমাদানকারী পরিবারকে জরুরি ভিত্তিতে গ্যাসের সংযোগ দিতে হবে, গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদনকারীদের সংযোগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে ও সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমাতে হবে।

সভায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) ভোলায় ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে আরও তিনটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে। গ্যাসক্ষেত্রগুলো হলো সদর উপজেলার ইলিশা-১, ভোলা নর্থ-২ ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় টবগি-১। এ ছাড়া আগের বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া, টবগী ও সদর উপজেলার ভেদুরিয়ায় চারটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সব মিলিয়ে ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুত রয়েছে। অন্যদিকে জেলার ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ৩টি কারখানাসহ ২ হাজার ৩৫০ জন গ্রাহক গ্যাস ব্যবহার করছে।

আন্দোলন কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী জানান, দুঃখের বিষয়, ভোলার গ্যাস ভোলাবাসীকে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু জেলাবাসী গ্যাস ব্যবহার করতে চায়। সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানির কাছে এ পর্যন্ত জেলার ছয় হাজার পরিবার আবেদন করেছে। যার মধ্যে সংযোগ পেয়েছে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ১ হাজার ২০০টি পরিবার চাহিদামতো টাকা (ডিমান্ড নোট) জমাও দিয়েছে। ২০০ পরিবারে রাইজার বসালেও গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়নি।

মোবাশ্বির জানান, একটি মহল চাচ্ছে না যে ভোলার গ্যাস ভোলার মানুষের ঘরে যাক। অথচ গ্যাসের সংযোগ না থাকার কারণে প্রতিদিন কয়েক শ মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ পুড়ছে, বন ধ্বংস হচ্ছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বেড়েই চলেছে। এ জন্য ভোলাবাসী কঠোর আন্দোলনে নেমেছে। তাদের দাবি মানা না হলে তাঁরা রাজপথ দখল করবে।

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, প্রবীণ সাংবাদিক আবু তাহের, রবিউল আলম, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক অভিনাষ নন্দী, নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব এস এম বাহাউদ্দিন, ভোলা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আবিদুল আলম প্রমুখ।