মাছ ধরতে খালে বেড়া

খালে বাঁশ–জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া-ভররামদিয়া খালে।
ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া-ভররামদিয়া সরকারি খালে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় কাউকে মাছ ধরতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, খালটি বহরপুর ইউনিয়নে। পানিনিষ্কাশন ও সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তেঁতুলিয়া-ভররামদিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের অধীনে খালটি সংস্কার করা হয়। সমিতির উপকারভোগী ৪৫০টি পরিবার। খালের আয়তন ৯০০ হেক্টর। জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। খননের চুক্তিমূল্য ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৯৮৭ টাকা। চলতি বছরের ৫ মার্চ প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়। সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক নাদের আহমেদ। সভাপতি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) নাদের আহমেদ।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুনচর, পাটুরিয়া, মাতলাখালী, ভররামদিয়া, খোদ্দরামদিয়া, আবাসন, চরগুয়াদহ গ্রামের লোকজন খালে মাছ শিকার করেন। কিন্তু দুই-তিন বছর ধরে কাউকে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয় না। কেউ মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের দেশীয় ফাঁদ পাতলে তা ভেঙে ফেলা হয়। মারধর করা হয়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকার কারণে কেউ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। মাছ শিকার করেন মিল্টন মৃধা নামের এক ব্যক্তি।

মিল্টন মৃধা বলেন, ‘লিখিতভাবে কোনো আবেদন করা হয়নি। ছাত্রলীগ নেতা আনিসুর রহমানদের সঙ্গে কথা বলে খালটি নিয়েছি। কিছু খরচপাতি দিয়ে হয়েছে। এ ছাড়া খালের মাঝখানে অনেকের পুকুর আছে। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তবে তেমন একটা মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে মাছ শিকার করা অন্যায় কি না, জানি না। কারণ, চায়না দোয়ারি দিয়ে মাছ ধরার কারণে অনেক মাছ বিলুপ্তির পথে।’

নাদের আহমেদ বলেন, ‘খালটি ইজারা দেওয়া হয় না। ছেলেপেলেরা খায়। সাধারণ জনগণ মাছ মেরে খায়। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সবার জন্য উন্মুক্ত। সমিতির মাধ্যমে টেন্ডার হবে।’

আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি আট বছরের নেতা। চলতি বছরের ২১ এপ্রিল ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব ছেড়েছি। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকাপয়সা নিইনি। ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য—সবাই আমরা একই এলাকার মানুষ। তাঁরাই খালটি খনন করেছেন। খাল বড় হওয়ায় বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা বলছেন। আমাদের কারও পক্ষে খাল ইজারা দেওয়া সম্ভব নয়। আমার কাছে টাকাপয়সা দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হোক।’

বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল হক বলেন, ‘ওই খালের বিষয়টি আমি জানি না। কেউ কোনো অভিযোগও করেনি তবে উন্মুক্ত খালে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করার কোনো সুযোগ নেই। সবাই উন্মুক্তভাবে মাছ শিকার করবে।’