মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ, বেড়েছে ফলন

মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করলে ব্রি ধান-৯২–এর ফলন আসবে হেক্টরপ্রতি আট মেট্রিক টন।

টাঙ্গাইলে মাটির গুণাগুণ বিশ্লেষণ করে পরিমাণমতো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে ধানের অধিক ফলন পেয়েছেন কৃষক। মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের ফলে উৎপাদন খরচ যেমন কম হয়েছে, তেমনি ফলন পাওয়া গেছে আশানুরূপ। এই পদ্ধতিতে ধান আবাদে ফলন বেড়েছে ২৫ ভাগ। মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

মৃত্তিকা গবেষণা ও গবেষণা সুবিধা জোরদারকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ভাতকুড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনের দুই বিঘা জমি নেওয়া হয় সুষম মাত্রায় সারের প্রায়োগিক পরীক্ষার জন্য। আবাদ করা হয় নতুন জাতের ব্রি ধান-৯২। সেখানে ৩৩ শতাংশ জমিতে কৃষক সার প্রয়োগ করেন তাঁর নিজের মতো করে।

বাকি ৩৩ শতাংশ জমিতে মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ করা হয় সুষম মাত্রায়। সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা সেই জমির ধান কর্তন এবং মাড়াই শেষে পরিমাপ করে দেখা যায় ফলন বেশি হয়েছে অন্তত ২৫ ভাগ। আনোয়ারকে দেখে আশপাশের কৃষকেরাও এখন অতিরিক্ত সার প্রয়োগ না করে মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগের কথা ভাবছেন।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করলে ব্রি ধান-৯২–এর ফলন আসবে হেক্টরপ্রতি আট মেট্রিক টন।

কৃষক আনোয়ার জানান, টাঙ্গাইল মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের পরামর্শে মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সার দিয়েছিলেন। এ জন্য তাঁর জমির ফলন ভালো হয়েছে। যাঁরা নিজেদের মতো করে জমিতে সার দিয়েছেন তাঁদের জমিতে ফলন হইছে অনেক কম। ভাতকুড়া গ্রামের অপর কৃষক মো. আসাদুজ্জামান ও জলিলও বললেন একই কথা।

কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ করলে ধানের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। এ ছাড়া হেক্টরপ্রতি ফলন বাড়ে অন্তত এক মেট্রিক টন।

গত ২১ মে ভাতকুড়া গ্রামে ওই জমি পরিদর্শন করেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. কামারুজ্জামান। তিনি জানান, মাটির উর্বরতার মান সব জায়গায় একরকম নয়। তাই মাটি পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ করলে ফলন ভালো হয়। তাঁদের এই প্রদর্শনীই তার বাস্তব প্রমাণ।

তিনি বলেন, এই বার্তাটি সারা দেশের কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দিতে চাই। তা ছাড়া সার অপচয় রোধ করতে হবে। কৃষকদের জানতে হবে সঠিক প্রয়োগ। টাঙ্গাইলে খুব সহজেই নামমাত্র খরচে মাটি পরীক্ষা করা যায়।