মাদক মামলায় আট শর্তে স্বাভাবিক জীবনের সুযোগ পেলেন তিনজন

আদালত
প্রতীকী ছবি

বৃদ্ধ মা–বাবার দেখাশোনা, গ্রামের রাস্তায় বৃক্ষরোপণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ পড়াসহ আট শর্তে দুই তরুণ ও এক যুবককে মাদক মামলা থেকে দায়মুক্তি দিয়েছেন নাটোরের একটি আদালত। অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার পরও সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার জন্য এ রায় দেন আদালত।

নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লালপুর থানার একটি মাদক মামলায় (জিআর-৭৫/২০১৯) বাংলাদেশ প্রবেশন অব অফেন্ডার্স বিধি মোতাবেক এই দায়মুক্তির আদেশ দেন।

দায়মুক্তি পাওয়া তিনজন হলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার বাকনাই গ্রামের মো. কিবরিয়া (৩৬), পুরোনো ঈশ্বরদীর নুর ইসলামের ছেলে মো. মানিক (২৫) ও পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মাজদিয়া গ্রামের কালাম হোসেনের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২০)।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মাদক সেবনের অভিযোগে ২০১৯ সালে ওই তিনজন আটক হন। তাঁদের বিরুদ্ধে আদলতের সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণে তাঁদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন। তবে আদালত তাঁদের আট দফা শর্তে এক বছরের জন্য দায়মুক্তি দিয়েছেন।

শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করা; গ্রামের সরকারি রাস্তার পাশে বনজ ও ফলদ বৃক্ষরোপণ; মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া; মাদক সেবন, পরিবহন ও বিক্রয় না করা; ধূমপান না করা; গ্রামের স্কুলে স্বেচ্ছাশ্রমে সেবামূলক কাজ করা; মাদকবিরোধী জনমত ও জনসচেতনতায় অংশগ্রহণ করা। এসব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রবেশন কর্মকর্তার অধীন তাঁদের ন্যস্ত করা হয়।

দায়মুক্তি পাওয়া মো. মানিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আদালতের দেওয়া শর্তগুলো মেনে চলার মধ্য দিয়ে সমাজে একজন ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করব। আদালতের দেওয়া শর্তগুলো কষ্টকর নয়। কারণ, এগুলো পালন করা এমনিতেই আমাদের দায়িত্ব।’

মো. মানিকের আইনজীবী দীনাই তাছরীন জানান, যেসব অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা নেই এবং তাঁরা সংশোধনে আগ্রহী, তাঁদেরই মূলত দায়মুক্তির সুযোগ দেন আদালত। এ ক্ষেত্রে তাঁদের দুজন অভিভাবক ও আইনজীবীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই আদেশে সমাজে মাদকসেবীর সংখ্যা কমবে এবং মাদকবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন তিনি।