মাদারীপুরে ইকোপার্কের জমি ‘অধিগ্রহণ’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরে ইকোপার্ক প্রকল্পের জন্য বসতঘর উচ্ছেদ করে জমি ‘অধিগ্রহণ’ বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়াচর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরের চরমুগরিয়া ইকোপার্ক প্রকল্পে বসতঘর উচ্ছেদ করে জমি ‘অধিগ্রহণ’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়াচর এলাকায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।

তবে বন বিভাগ বলছে, নয়াচর এলাকাটি জেলা প্রশাসনের খাসজমি। এখানে কোনো অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। ইকোপার্ক প্রকল্পের মধ্যে যাঁদের ঘরবাড়ি পড়েছে, তাঁদের অন্যত্র থাকার জন্য সরকারিভাবে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে চরমুগরিয়া এলাকার প্রায় আড়াই হাজার বানর হস্তান্তরের জন্য ১০ দশমিক ৩৬ একর জমিতে বন বিভাগ তৈরি করে ইকোপার্ক। পার্কের জায়গা কম হওয়ায় বানরগুলো হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। পরে পার্কটির আয়তন বৃদ্ধি করতে আরও ৭ দশমিক ৬১ একর জমি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নেয় বন বিভাগ।

মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বলেন, ইকোপার্কের আয়তন বৃদ্ধি করতে যে ৭ দশমিক ৬১ একর জমি ধরা হয়েছে, সেখানে পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। এই জমিতে থাকা ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে জমি নিয়ে গেলে এলাকার মানুষগুলো ভূমিহীন হয়ে পড়বে। ইকোপার্কের উন্নয়নের চেয়েও ক্ষতির মুখে পড়বে এলাকার বাসিন্দারা। এ সময় তাঁরা বসতঘর উচ্ছেদ ও জমি অধিগ্রহণ বন্ধ না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদ মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি মামসুল হক মাতুব্বর, স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন ব্যাপারী, মাজেদ মাতুব্বর, সিদ্দিকুর রহমান, পেয়ারপুর ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার ফরাজী, পেয়ারপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তোতা চৌকিদার, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ ব্যাপারী, পেয়ারপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জমিস মোল্লা, অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর সদস্য সোলেমান ব্যাপারী প্রমুখ।

এ বিষয়ে জেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা তাপস কুমার সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ৩১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ইকোপার্ক তৈরির কাজ চলমান। পার্কটির আশপাশে সব খাসজমি। এখানে কারও ব্যক্তিগত জমি নেই। জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে। এখন যাঁরা মানববন্ধন বা বিক্ষোভ করছেন, তাঁরা এসব জেনেও করছেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট সবাই অবগত।