মাদারীপুরে ‘ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায়’ দুই কৃষককে কুপিয়ে জখম

হামলায় আহত কৃষক রাশেদুল ব্যাপারী। সোমবার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দুই কৃষককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত দুই কৃষক হলেন লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার আলাউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে সাদ্দাম মাতুব্বর (৩০) ও একই এলাকার মজিদ ব্যাপারীর ছেলে রাশেদুল ব্যাপারী (৪০)। তাঁরা একে অপরের খালাতো ভাই। এ ঘটনায় আহত সাদ্দামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন চিকিৎসক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পারভেজ ব্যাপারী ও তাঁর ভাই রানা ব্যাপারী লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। সম্প্রতি ওই এলাকার সাদ্দাম ও তাঁর খালাতো ভাই রাশেদুল এর প্রতিবাদ করেন। এটা নিয়ে সাদ্দামের সঙ্গে পারভেজের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে রোববার রাতে পারভেজ দলবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালান।

এ সময় সাদ্দামকে কুপিয়ে জখম করেন হামলাকারীরা। খবর পেয়ে রাশেদুল সাদ্দামের বাড়িতে ছুটে এলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় মধ্যরাতে সাদ্দামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক।

সাদ্দামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর বোন রানী বেগম। তিনি বলেন, ‘যারা কুপিয়েছে, তারা এলাকার চিহ্নিত ইভ টিজার। পারভেজ ও রানার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এলাকার সাধারণ মানুষও ভীতসন্ত্রস্ত। আমরা তাদের বিচার চাই।’

আহত রাশেদের ভাই হেদায়েত লস্কর বলেন, ‘স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে পারভেজ ও তাঁর ভাই প্রায়ই মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতেন। বিষয়টি নিয়ে আমার ভাই প্রতিবাদ করেন। এ কারণে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

এখানে অন্য ঘটনা থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন অভিযুক্ত পারভেজ ব্যাপারী। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। আমার ভাইয়ের সঙ্গে সাদ্দামের বিরোধ ছিল। তবে আমার ভাই সাদ্দাম ও রাশেদুলের ওপর হামলা চালায়নি।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছে সদর থানার পুলিশ। আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাত থেকে অভিযান চলমান।’