মাদ্রাসায় শিশুকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষক বহিষ্কার

মারধরের ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসায় আট বছর বয়সী এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষককে হাটহাজারী সদরের মারকাযুল ইসলামিক একাডেমি নামের হাফেজি মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁর নাম মাওলানা ইয়াহিয়া।

গতকাল বিকেলে মাদ্রাসাটিতে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের ভিডিও সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

সূত্র জানায়, হেফজ বিভাগের শিশুটিকে দেখতে গতকাল বিকেলে তার বাবা-মা মাদ্রাসায় আসেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পরপরই শিশুটি মাদ্রাসা থেকে বাইরে বের হয়। তখন শিশুটিকে ধরে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে মারধর করেন শিক্ষক ইয়াহিয়া।

৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক ইয়াহিয়া শিশুটিকে ঘাড় ধরে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে যান। পরে তিনি শিশুটিকে বেধড়ক পেটান।

মারধরের ভিডিও সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

মারধরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল রাত ১২টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন ওই মাদ্রাসায় যান। একই সঙ্গে শিশুটির মা-বাবাকেও খবর দেওয়া হয়।

ইউএনও রুহুল আমিন প্রথম আলোকে জানান, তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, অভিযুক্ত শিক্ষক, মাদ্রাসার পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেন।

অভিযুক্ত শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁকে হাটহাজারীর কোনো মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

শিশুটিকে ধরে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে মারধর করেন শিক্ষক ইয়াহিয়া
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য তিনি শিশুটির মা-বাবাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু শিশুটির মা-বাবা মামলা করতে রাজি হননি।

শিশুটির বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা মামলা করতে চান না। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ওপর কোনো চাপ নেই।

ইউএনও রুহুল আমিন জানান, গতকাল ছিল শিশুটির জন্মদিন। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুটিকে জন্মদিনের উপহার দেওয়া হয়েছে।

আগামী সপ্তাহে হাটহাজারীর সব হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানান ইউএনও রুহুল আমিন। তিনি বলেন, বৈঠকে কোমলমতি শিশুদের প্রতি শিক্ষকদের আচরণের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হবে। কেউ এই নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।