‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছেলের ইটের আঘাতে প্রাণ গেল মায়ের

‌শেরপুরের না‌লিতাবাড়ী‌ উপজলার ভোগাই নদী থেকে নিহত ওই মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে পু‌লিশ। শুক্রবার সকালে শহরের নিচপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছেলের ইটের আঘাতে এক মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকালে পৌর শহরের ভোগাই নদী থেকে ওই মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ছেলেকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা।

নিহত ওই মায়ের নাম নুরভানু বেগম (৫৫)। তিনি নালিতাবাড়ী পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিজপাড়া মহল্লার মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। আটক ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছেলের নাম মো. ফারুক মিয়া (৩৫)।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহত নুরভানুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সিরাজুল ও নুরভানুর সংসারে দুটি ছেলেসন্তান আছে। ছোট ছেলে ফারুক ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ হওয়ায় বাবার মৃত্যুর পর তিনি মায়ের সঙ্গে একটি ঘরে থাকতেন। নুরভানু শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। খাবার নিয়ে ফারুক মাঝেমধ্যে মাকে মারধর করতেন। গত বুধবার রাতের কোনো একসময় মা ও ছেলের মধ্যে ঝগড়া লাগে। একপর্যায়ে ঘরে থাকা ইট দিয়ে মায়ের মাথায় একাধিকবার আঘাত করেন ফারুক। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সেদিন মায়ের লাশ ঘরে লুকিয়ে রেখে রাতে বাড়ির কাছেই ভোগাই নদীতে মায়ের লাশ ফেলে দেন ফারুক। আজ সকালে এলাকাবাসী নদীতে নুরভানুর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ সকাল সাড়ে আটটার দিকে নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফারুক পালানোর চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর মো. জহুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার রাতের কোনো একসময় ফারুক ইট দিয়ে তাঁর মায়ের মাথায় আঘাত করেন। এতেই তিনি মারা যান। লাশ ঘরেই লুকিয়ে রেখে বাইরে খোঁজাখুঁজি করেন। গতকাল রাতে লাশ নদীতে ফেলে দেন। ফারুক পালাতে চাইলে তাঁকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ইটটি উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।