মামুনুলকে ঘেরাও: কুলিয়ারচরে ইউএনওর বাসাসহ ৩ স্থানে হামলা-ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সরকারি বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা–ভাঙচুর করা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্টের একটি কক্ষে নারীসহ হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ঘেরাওয়ের জেরে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সরকারি বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা–ভাঙচুর করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে এই হেফাজত নেতার অনুসারীরা কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবন, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও ত্রৈলোক্যনাথ গণগ্রন্থাগারে হামলা–ভাঙচুর চালান। হামলাকারীদের থামাতে পুলিশ পাঁচটি রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের নাজিরদীঘি গ্রাম থেকে কয়েক শ মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ-মিছিল বের করেন। ওই গ্রামের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন। মিছিল থেকে মামুনুল হককে ঘেরাওয়ের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি শহরে পৌঁছার পর বিক্ষোভকারীরা কুলিয়ারচর ইউএনওর সরকারি বাসভবনে প্রথমে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় ইউএনও রুবায়াৎ ফেরদৌসী বাসায় ছিলেন না। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে বাসার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে বাধা দেয়। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। হামলায় ইউএনওর বাসার জানালার কাচ ও কিছু আসবাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ এ সময় হামলা চালায় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে। সেখানেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠি দিয়ে দরজা-জানালায় আঘাত করা হয়েছে। এতে জানালার কাচ ভেঙে গেছে। পরে বিক্ষোভকারীরা পাশে মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দরজা ও জানালা ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচটি রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

হামলা ও ভাঙচুরের চিহ্ন
ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে ইউএনও রুবায়াৎ ফেরদৌসী বলেন, ‘হামলায় আমার বাসা ও এসি ল্যান্ডের কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার বাসায় যখন হামলা হয়, তখন আমি এসি ল্যান্ডের কার্যালয়ের সামনে ছিলাম। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোনে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম সুলতান মাহমুদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে যোগাযোগ করা হয় ভৈরব ও কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান দিপুর সঙ্গে। তিনি বলেন, পেশাগত প্রয়োজনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছেন। ঘটনাটি তিনি শুনেছেন, তবে বিশেষভাবে জানেন না।

কুলিয়ারচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, রাতের ঘটনায় অন্তত চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচটি গুলি ছুড়তে হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।