আওয়ামী লীগের লোগো

মে‌হেরপুর পৌর আওয়ামী লী‌গ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৬ সালে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও নতুন করে কাউন্সিল ও কমিটি গঠিত হয়নি। ওই কমিটির আটজন মারা গেছেন। পৌর কমিটিতে পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতা বলছেন, নতুন কমিটি না হওয়ায় সংগঠনে কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে। তাঁরা দ্রুত কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর আওয়ামী লী‌গের সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০০৩ সা‌লের ৭ আগস্ট। এতে ৬৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। তিন বছর মেয়াদি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান ইয়ারুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আক্কাস আলী। কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও আর নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি।

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির আটজন মারা গেছেন। তাঁরা হলেন সহসভাপতি ওমর ফারুক, দপ্তর সম্পাদক খোকন মিয়া, সদস্য খাদেমুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ হারু, পন্টু মিয়া, জহির রায়হান, মোশারফ মণ্ডল ও ছ‌লিম মিয়া।

পৌর আওয়ামী লী‌গের সাংগঠনিক সম্পাদক খ ম ইম‌তিয়াজ বিন হারুন ব‌লেন, দীর্ঘদিন একই কমিটি থাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। নতুন কমিটি হলে কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আসে। একই কমিটি দীর্ঘদিন থাকলে সেই কমিটি দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। দ্রুত কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান তি‌নি।

বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসলাম খান বলেন, ‘কবে কমিটি গঠিত হয়েছে, তা আমার নিজেরই মনে নেই। দীর্ঘদিন পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি না হওয়া খুবই দুঃখজনক। এর আগে বেশ কয়েকবার কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়নি। আমরা চাই দ্রুত কমিটি গঠন করা হোক।’

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির শীর্ষ নেতারা দাবি করেছেন, তাঁরা একাধিকবার নতুন কমিটি গঠনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ সম্পর্কে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠনে আমি পাঁচ-সাতবার চেষ্টা করেছি। আগামী কমিটিতে আমি সভাপতি প্রার্থী। দলের নেতা–কর্মীরা যদি চান আমাকে রাখবেন, না হয় রাখবেন না। সিদ্ধান্ত তাঁদের। কিন্তু আমি চাই কমিটি হোক।’ একই কথা বলেন সংগঠনের সভাপতি ইয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিনবার কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা সম্ভব হয়নি। গত নভেম্বরে কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও সেটাও সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকা‌শ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লী‌গের দুই নেতা প্রথম আলোকে ব‌লেন, মেহেরপুরের আওয়ামী লী‌গের রাজনী‌তি‌তে দু‌টি পক্ষ রয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লী‌গের সভাপ‌‌তি গোলাম রসুল এক‌টি প‌ক্ষের নেতৃত্ব দি‌চ্ছেন। অপর প‌ক্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লী‌গের সভাপ‌তি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হো‌সেন। দুই প‌ক্ষের সমন্বয় না থাকায় পৌর আওয়ামী লীগসহ আরও কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের ক‌মি‌টির পুনর্গঠন সম্ভব হয়নি।

এ সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লী‌গের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রা‌হিম শা‌‌হিন ব‌লেন, পৌর আওয়ামী লী‌গের ক‌মি‌টি বিলুপ্ত ক‌রে ক‌মি‌টি গঠ‌‌নের জন‌্য জেলা আওয়ামী লী‌গের এক‌টি বর্ধিত সভার আহ্বান করা হ‌বে। সভাপ‌তি মে‌হেরপু‌রে এলে এ বিষ‌য়ে আলোচনা ক‌রে ‌সিদ্ধান্ত নেওয়া হ‌বে।