মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ায় মাদ্রাসাছাত্রকে ডেকে নিয়ে হত্যা

মাদারীপুরের কালকিনিতে মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম হত্যা মামলার একমাত্র আসামি বোরহানউদ্দিন হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম (১৪) হত্যা মামলার একমাত্র আসামি বোরহানউদ্দিন হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে মাদারীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেনের আদালতে তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আশফাক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল রোববার বগুড়া সদর থানা-পুলিশের সহায়তায় বগুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বোরহানউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত শুক্রবার সকালে কালকিনি উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার একটি পুকুর থেকে আরিফুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আরিফুল মাদারীপুর সদর উপজেলার হোগলপাতিয়া এলাকার হারুণ সরদারের ছেলে। সে কৃষ্ণনগর এলাকার দারুল কোরআন হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসায় নজরানা বিভাগের ছাত্র ছিল। এ ঘটনার এক দিন পর নিহতের বাবা হারুণ সরদার বাদী হয়ে ওই মাদ্রাসার বাবুর্চি বোরহানউদ্দিন হাওলাদারকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

আসামির জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কালকিনি থানার উপপরিদর্শক সৈয়দ হাসিব আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, আসামি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি আদালতকে বলেছেন, তাঁর মেয়ে ও মাদ্রাসার পেছনে আরও একটি মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাবসহ কুপ্রস্তাব দেয় আরিফুল। মেয়ের মুখ থেকে বিষয়টি শুনে মনঃক্ষুণ্ন হন বোরহান। পরে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে আরিফুলকে মাদ্রাসা থেকে ডেকে নিয়ে বোরহান বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে বসেন। এরপর আরিফুলের কাছে তাঁর মেয়েকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আরিফুল কোনো উত্তর না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে দুটি থাপ্পড় দেন বোরহান। পরে পানিতে টেনে নামিয়ে আরিফুলের ঘাড় ধরে পানিতে ডুবিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন।

কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক বলেন, ‘হত্যার পরপরই আসামি এলাকা ছেড়ে বগুড়া চলে যান। আমরা খবর পেয়ে এক দিন পরই বগুড়ায় অবস্থান করি। কৌশলে পুলিশের সদস্যরা আসামি বোরহানউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। এ ছাড়া আসামি পুলিশ ও আদালতের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।’

জানতে চাইলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক রমেশ চন্দ্র দাশ প্রথম আলোকে বলেন, হত্যা মামলার আসামি বোরহানউদ্দিনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়। পরে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।