মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ কোষাধ্যক্ষের

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম। আজ সোমবার বিকেলে রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁয়
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম। আজ সোমবার বিকেলে রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে জহুরুল ইসলাম বলেন, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন নেতাকে শ্রমিকেরা নির্বাচিত করেছেন তাঁদের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নের জন্য। কিন্তু হাজার হাজার শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করে জীবন ও জীবিকা নিয়ে খেলায় মেতেছেন ইউনিয়নের নেতারা। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে শ্রমিকদের প্রতি এই অন্যায়ের পাপের বোঝা তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন।

জহুরুল ইসলাম রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষের পাশাপাশি বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির দপ্তর সম্পাদক। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তাঁকে দিয়ে শুধু ব্যাংকের চেক আর ভাউচার স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সংগঠনের আয় হলেও জমার খাতায় কারচুপি। প্রতিদিন রাজশাহীর মিনিবাস থেকে আঞ্চলিক কমিটির নামে প্রায় ২০০ গাড়ি থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হয়। ঢাকার লোকাল গাড়ি থেকে ৩১০ টাকা করে তোলা হয়। কিন্তু খাতায় জমা হয় মাত্র ১০০ টাকা। ঢাকার কোচ থেকে প্রতিদিন হাজার টাকা আদায় করা হলেও জমার খাতায় নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, রাজশাহীর বাইরে বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলের গাড়িপ্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা তোলা হলেও জমা হয় না। ১০১ জন শ্রমিকের নামে ৩০ টাকা করে তোলা হয়। জমার খাতায় যোগ হয় মাত্র ২০ টাকা করে। কর্মচারীদের ৯ মাসের বেতন–ভাতা বাকি রয়েছে। আনুমানিক ২০০ থেকে ২৫০ জন কন্যাদায়গ্রস্ত শ্রমিকের অর্থ পরিশোধ বাকি, মৃত ৫০ থেকে ৭০ জন শ্রমিকের পরিবারের এককালীন টাকা প্রদান বাকি, ৩০ থেকে ৪০ জনের শিক্ষা ভাতার টাকা পরিশোধ বাকি পড়ে আছে। কিন্তু শ্রমিক নেতারা বলে বেড়ান যে তাঁরা শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করেন।

জহুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্নভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা তোলা হয়। কিন্তু খাতায় নেতারা যুক্ত না করে টাকা পকেটে ভরেন। এ থেকে চিকিৎসা, সাহায্য ও অন্যান্য খরচ দেখিয়ে থাকে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। এ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, কেরানিকে নিয়ে এ বিষয়ে বসতে হবে। এই বলে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছেন। এ নিয়ে এই সংগঠনের কোনো নেতা–কর্মী ভয়ে মুখ খুলতে চান না। তিনি এর বিরোধিতা করছেন বলে হুমকিও পাচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি কোষাধ্যক্ষের সংবাদ সম্মেলনের কথা জানেন না। করোনার কারণে প্রায় দুই বছর অনেক টাকা তোলাই বন্ধ ছিল। দু–একটি হয়তো চালু আছে। টাকার অভাবে তাঁদের কর্মচারীদের ৮-৯ মাসের বেতনও দিতে পারেননি। কোষাধ্যক্ষ যেহেতু অভিযোগ করেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে দেখবেন। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর বাইরে আছেন। এ বিষয়ে আরও জানতে সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।