যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন আসামি তারেক

এমসি কলেজে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেককে (মধ্যখানে) মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৯–এর একটি দলসংগৃহীত

মুখভর্তি লম্বা দাড়ি ছিল। ছিল মাথায় চুল। কিন্তু নিজেকে আড়াল করতে চুল-দাড়ি কেটে ফেলেন তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক (২৮)। আশ্রয় নেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দুর্গম হাওর এলাকার একটি গ্রামে। ওই গ্রামে তাঁর এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় আছেন। ওই ব্যক্তির ঘর থেকেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
তারেকুল ইসলাম সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আসামির তালিকায় তাঁর নাম ২ নম্বরে রয়েছে। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামে। র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কোম্পানির (সিপিসি-৩) সদস্যরা মঙ্গলবার দিনভর দিরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে জগদল ইউনিয়নের বড়মা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ
ফাইল ছবি

র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কোম্পানির কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ রাসেল জানান, তারেকুল ওই ঘরে একটি খাটের ওপর বসা ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি দাড়ি ও চুল কেটে ফেলেন।
র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, সোমবার রাতে তাঁদের কাছে তথ্য আসে তারেকুল দিরাই উপজেলায় আছেন। এরপর র‌্যাবের তিনটি দল অভিযানে নামে। প্রথমে প্রযুক্তির মাধ্যমে তারেকুলের পরিবারের একাধিক সদস্যদের কথোপকথনের সূত্র ধরে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় র‌্যাব।

জগদল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিবলি আহমেদ জানান, গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে তারেকুল দুই দিন ভাটিয়ারগাঁও গ্রামের একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। পরে মঙ্গলবার আশ্রয় নেন বড়মা গ্রামে আলী হোসেনের বাড়িতে। তাঁকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তিনি ছোট এক টিনের ঘরের ভেতর খাটে বসে মুঠোফোন দেখছিলেন। র‌্যাব সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করার পরই তিনি দুই হাত ওপরে তুলে দাঁড়িয়ে যান। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

থানা-পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ওই তরুণীর স্বামী ছয়জনের নাম উল্লেখ করে নয়জনের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরের শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গত রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর একে একে মামলার এজাহারভুক্ত অন্য চার আসামি পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হলেন তারেকুল ইসলাম। এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়াও সন্দেহভাজন আরও দুজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামি ছাত্রলীগের কর্মী।