যেভাবে বেঁচে ফিরল শিশু তাহমিনা

উদ্ধারের পর তাহমিনা
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী বাজারের পাশে গতকাল রোববার দুপুরে বানার নদে দুই সন্তানকে নিয়ে ঝাঁপ দেন এক মা। নদীর প্রবল স্রোতে দুজন নিখোঁজ হলেও তাহমিনা আক্তার (৯) নামের এক সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। নিখোঁজ মা ও আরেক সন্তানের খোঁজে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তবে তাঁদের পাওয়া যায়নি। আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে তল্লাশি শুরু হয়নি।

তাহমিনা আক্তার নারায়ণগঞ্জের মাদানীগড় এলাকার মৃত আবদুল মালেকের মেয়ে। তার মা নিখোঁজ আরিফা খাতুন (৪০) কাপাসিয়ার রায়েদ ইউনিয়নের বিবাদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে। নিখোঁজ অপরজন আরিফার ছোট মেয়ে মোছা. মুর্শিদা (৮)। তিন বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আরিফা তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি বিবাদিয়া গ্রামে থাকতেন।

কীভাবে বেঁচে ফিরে এল শিশু তাহমিনা, স্থানীয় লোকজনের কাছে সেটি নিজেই বলেছে। সিংহশ্রী বাজারে একটি ওষুধের দোকানে বসে তাহমিনা বলে, গতকাল সকালে তাকে ও তার ছোট বোনকে নিয়ে মা বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরের দিকে সেতুর কাছে (বরামা সেতু) নদীর (বানার নদ) পাড়ে নামে তারা। মা তার হাত ধরে ও বোনকে কোলে নিয়ে পাড় থেকে পানিতে ঝাঁপ দেন। এ সময় তাদের পাশে পানিতে ভাসছিল বেশ কিছু বাঁশের চাঁই। তাহমিনা বাঁশের চাঁই ধরে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে জেলেদের একটি নৌকা সেখানে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে।

নিখোঁজ আরিফার ভাই এমারত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁর বোন মস্তিষ্কের সমস্যায় ভুগছিলেন। মাঝে কিছুদিন সুস্থ ছিলেন, কিন্তু তিন মাস ধরে আবার সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। আরিফার আরেক ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, গত শনিবারও আরিফার জন্য ওষুধ আনা হয়েছিল। তাঁদের ধারণা, আরিফা আত্মহত্যা করতে সন্তানদের নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেন।

সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যার দিকে ডুবুরি দল অনুসন্ধান স্থগিত করে। প্রায় তিন ঘণ্টার অনুসন্ধানেও সেখানে নিখোঁজ দুজনের সন্ধান মেলেনি।

কাপাসিয়া থানার সিংহশ্রী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফজলুল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও কাপাসিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে ডাকা হয়। তারা অনুসন্ধান চালিয়েছে। তবে দুজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।