রংপুরে বাজারে উঠছে হাঁড়িভাঙা আম

বাগান থেকে হাঁড়িভাঙা আম পাড়ছেন চাষিরা। আজ রোববার মিঠাপুকুর উপজেলার লালপুকুর এলাকায়।
ছবি: মঈনুল ইসলাম

রংপুরে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। আজ রোববার জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা গাছ থেকে আম পাড়ার পর বিক্রি শুরু করেছেন।

এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিশেষ পণ্য পরিবহনে বাস-ট্রাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আম ব্যবসায়ীদের বিশেষ স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাসহ তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৭ জুন মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আমচাষিদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। সেখানে আম পরিপক্ব হওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয় ২০ জুন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ মেসবাহুল ইসলাম বলেন, এলাকায় প্রায় ১৭ লাখ হাঁড়িভাঙা আমগাছ রয়েছে। এ বছর জেলায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৭ হাজার মেট্রিক টন হাঁড়িভাঙা আমের উৎপাদন আশা করা হচ্ছে।

জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ও রানীপুকুর ইউনিয়ন, পদাগঞ্জ এলাকাসহ আরও কিছু এলাকায় আমের বাগান রয়েছে। খোড়াগাছ এলাকার আমচাষি আবদুল আলীমের তিন বিঘা জমির ওপর আমবাগান। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এবারও অনেক দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু সেটা অনেকটা কেটে গেছে। জুনের শুরুতে হলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসেছেন।’

প্রতি মণ হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৪০০ টাকায়। আজ রোববার মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ বাজারে।
ছবি: প্রথম আলো

লালপুকুর এলাকার হেলাল মিয়ার এক একর জমির ওপর আমবাগান। তিনি বলেন, ‘এখানে আমের পরিবহন নিয়ে সমস্যা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পরিবহনের বিষয়টি প্রশাসনের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

মিঠাপুকুর উপজেলার বকসিপাড়া এলাকার আমচাষি মনসুর আলী এক বিঘা জমিতে আম চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার আমের ফলন ভালো। গাছের আম প্রকারভেদে ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রতি হেক্টরে ৩০০ মণ আম উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রতি মণ আম ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হেক্টরপ্রতি আম বিক্রি থেকে চাষিদের আয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপরে। এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিলে চাষিদের হেক্টরপ্রতি লাভ থাকছে প্রায় তিন লাখ টাকা।