রংপুরে বৃষ্টি এলেই বিদ্যুৎ চলে যায়, নগরবাসীর ভোগান্তি

ঘন ঘন বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে
ফাইল ছবি

বৃষ্টি শুরু হলেই রংপুর নগরে বিদ্যুৎ চলে যাবে, এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। বৃষ্টি যতক্ষণ থাকে, বিদ্যুৎ-বিভ্রাটও ততক্ষণ চলে। মাঝেমধ্যে সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও বিদ্যুৎ স্থায়ী হয় না। দুই দিন ধরে রংপুরের মুন্সিপাড়া ফিডারের আওতাধীন বিদ্যুতের গ্রাহকেরা এই ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আজ সোমবার সারা দিন কোনো বৃষ্টি না থাকলেও সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত তিনবার বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গতকাল রোববার রাত ১০টায় বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ চলে যায়। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামলেও রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। এর আগে গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। সকাল ছয়টার দিক বৃষ্টি থেমে গেলেও বিদ্যুৎ আসতে সকাল নয়টা বেজে গেছে।

রংপুরে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-২ (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই বিতরণ কেন্দ্রের মুন্সিপাড়া ফিডারের বিরাট এলাকার কিছু জায়গায় বিদ্যুতের তারের সঙ্গে গাছের ডালপালা রয়েছে। বৃষ্টি এলে সেখানে পানি পড়ে এবং বাতাসের কারণে ডালের সঙ্গে তারের ঘষা লেগে তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আপনা-আপনি বিদ্যুৎ-বিভ্রাট ঘটে বলে নেসকোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। এ সময় বিদ্যুতের লাইনে ত্রুটি বের করে মেরামত করতে অনেক সময় লেগে যায়।

প্রতিদিন বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় মুন্সিপাড়া ফিডারের আওতাধীন মুন্সিপাড়া, কেরানীপাড়া, মাস্টারপাড়া, কাচারিবাজার, আদালত, পুলিশ লাইনস, সরকারি অফিসপাড়ার বেশ কয়েকটি অফিস ও হনুমানতলার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

নগরের কোরানীপাড়ার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল বৃষ্টির সঙ্গে তেমন বাতাস ছিল না। কিন্তু বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ চলে গেছে। বৃষ্টি থামলেও বিদ্যুৎ আসতে অনেক সময় লাগে। অনেক সময় মধ্যে কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিদ্যুৎ এসে আবার চলে যায়। এতে বাতি, পাখাসহ অনেক বৈদ্যুতিক সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, গত বছরও বিদ্যুৎ অনেক ভুগিয়েছে। এবারও একই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে বিদ্যুতের কয়েকজন গ্রাহক এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বিদ্যুতের দুরবস্থার বিষয়ে প্রতিকার চেয়েছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেসকোর একজন প্রকৌশলী বলেন, কয়েক দিন ধরে স্থানীয় বিদ্যুতের গ্রিডে ত্রুটি থাকায় এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে।

বিদ্যুতের গ্রিডে ত্রুটির অভিযোগ অস্বীকার করে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস উঠলে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে। কারণ, অনেক জায়গায় বিদ্যুতের তারের সঙ্গে গাছের ডাল রয়েছে। বাতাসের সময় ডালের সঙ্গে তারের ঘষা লেগে তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই স্থানে বৃষ্টির পানি পড়েও বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি মেরামত করা হয়।