রাজবাড়ীতে স্কুলের শোকেস মুছতে গিয়ে মিলল তক্ষক, পরে অবমুক্ত

রাজবাড়ীতে একটি বিদ্যালয়ে বিপন্ন প্রজাতির এই তক্ষকটি পাওয়া যায়। বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ী সদর উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শোকেস মুছতে গিয়ে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বড় আকৃতির একটি তক্ষক পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার দুপুরে শহরের অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রাণীটি পাওয়ার পর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই কার্যালয়ের পেছনে তক্ষকটি অবমুক্ত করা হয়।

দুপুরে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টেবিলের ওপর একটি পলিথিনের থলের মধ্যে তক্ষকটি রাখা। গায়ের রং ধূসর। পিঠের ওপরে ছোট ছোট লাল রঙের ফোঁটা। লেজ বড়। পরে সেটি একটি স্বচ্ছ থলের মধ্যে রাখা হয়।

কয়েকজন সংবাদকর্মী ছবি তোলেন। ওই সময় তক্ষকটি শান্ত হয়ে বসে ছিল। কিছু সময় পর এটিকে প্রাণিসম্পদ অফিস ভবনের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কয়েকজন সংবাদকর্মীর উপস্থিতিতে তক্ষকটি একটি গাছের নিচে অবমুক্ত করা হয়।

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খায়ের উদ্দিন আহমেদ বলেন, গিরিগিটি প্রজাতির এই প্রাণীটির ইংরেজি নাম গ্যাকো। এটি নির্বিষ এবং বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। সাধারণত স্যাঁতসেঁতে স্থানে, বড় গাছের ফোঁকরে, বাড়ির ছাদে বা ঘরের কোণে বাস করে। অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিসকক্ষ থেকে এটি উদ্ধার করা হয়েছে। আকৃতি প্রায় ১০ ইঞ্চির মতো। সাধারণত এত বড় আকারে তক্ষক খুব কম দেখা যায়। এই প্রাণীকে ঘিরে একটি প্রতারক জমজমাট ব্যবসা করে আসছে।

বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে তক্ষক ব্যবহার করা হয় জানিয়ে খায়ের উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীটি আমাদের হাতে আসার পর বন বিভাগ ও সদর উপজেলা পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। সবার সঙ্গে কথা বলার পর এটি অবমুক্ত করা হয়। কারণ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এসব প্রাণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

রাজবাড়ীতে একটি বিদ্যালয়ে পাওয়া তক্ষকটি সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পেছনে অবমুক্ত করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে

এত বড় তক্ষক আগে কখনো দেখেননি বলে উল্লেখ করেন অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান অফিস সহকারী কল্লোল আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষের কক্ষের শোকেস পরিষ্কার করতে যাই। এ সময় একটি ক্রেস্টের পেছনে বড় আকারের তক্ষকটি দেখতে পাই। প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এ সময় কয়েকজন শিক্ষককে ডেকে আনি। এরপর হাতে কাপড় নিয়ে তক্ষকটি একটি পলিথিনের ব্যাগে ঢুকাই।’

খবরটি অল্প সময়ের মধ্যে প্রচার হয়ে যায় জানিয়ে কল্লোল আহমেদ বলেন, ‘পাওয়ার পরই তক্ষকটি প্রাণিসম্পদ অফিসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ সময় কয়েকজন তক্ষকটি কেনার কথা জানান। এটি বিক্রি করলে কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়। আমি রিকশায় ওঠার সময়ও একজন বাধা দিয়েছেন। কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমি প্রাণিসম্পদ অফিসে নিয়ে আসি।’