রাজবাড়ীর ‘ভিক্টর’-এর ওজন ৩০ মণ, দাম ১২ লাখ

রাজবাড়ীর সদর উপজেলার এক দম্পতির পালন করা ৩০ মণ ওজনের ‘ভিক্টর’ নামে ষাঁড়টির দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা
ছবি: প্রথম আলো

বেশ আদরযত্ন করে দুই বছর ধরে প্রাণীটিকে লালন-পালন করছেন ইউনুস শেখ ও বুলু বেগম দম্পতি। অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির নাম তাঁরা দিয়েছেন ‘ভিক্টর’। ৩০ মণ ওজনের ভিক্টরকে এবারের কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বিক্রি করতে চান তাঁরা। এ জন্য দাম হাঁকিয়েছেন ১২ লাখ টাকা।

ইউনুস শেখ ও বুলু বেগম রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর গ্রামের গৌরীপুর গ্রামের বাসিন্দা। ইউনুস রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ ছাড়া বাড়তি আয়ের জন্য বাড়িতে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী।

বুলু বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর আগে ষাঁড়টি ৮৭ হাজার টাকায় আমরা কিনি। এর পর থেকে সন্তানের মতো এটিকে আদরযত্ন করছি। প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াই। কলা, আপেল, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফল খেতে দেই। ঘাস খাওয়াই। এ ছাড়া চালের খুদ (ভাঙা চাল) দিয়ে পাতলা ভাত রান্না করে খড় ও অন্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াই। এভাবেই আমাদের ষাঁড়টিকে বড় করে তুলেছি। গত কোরবানির ঈদেও অনেকে কিনতে এসেছিল। কিন্তু আমরা কাউকে দেখাইনি। কারণ, গত ঈদে আমাদের বিক্রির পরিকল্পনা ছিল না। তবে এবার বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছি।’

ইউনুস শেখ বলেন, ‘আমরা ষাঁড়টির দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা। এ ধরনের ষাঁড়ের দাম বিভিন্ন এলাকায় আরও বেশি চাওয়া হয়। কিন্তু আমরা বাড়তি দাম চাচ্ছি না। সন্তোষজনক দাম পেলে ষাঁড়টি বিক্রি করে দেব।’

গতকাল বুধবার বিকেলে ইউনুস শেখ-বুলু বেগম দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ষাঁড়টির জন্য একটি আধা পাকা ঘর তৈরি করেছেন তাঁরা। সেই ঘরের মেঝেতে ষাঁড়টি শুয়ে আছে। এই প্রতিবেদককে দেখাতে ষাঁড়টিকে দাঁড় করান বুলু বেগম। এরপর সেটিকে কলা ও ঘাস খেতে দেন।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার পাঁচ উপজেলার ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ হাটে তোলা হবে। এবার জেলায় পশু আছে ৩৬ হাজার ৮০০টি। এর মধ্যে গরু আছে ২১ হাজার ৮৮৫টি। সবচেয়ে বেশি গরু রাজবাড়ী সদর উপজেলায়। পাঁচ উপজেলায় মোট ছাগল রয়েছে ১৪ হাজার ১৪০টি।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফজলুল হক সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খামারিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি, এবার পশুর কোনো সংকট হবে না। এবার পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। ফলে কোরবানির পশু ঢাকায় নেওয়ার ক্ষেত্রেও আগের মতো ঝামেলা পোহাতে হবে না। এ ছাড়া জেলায় ১৮ থেকে ২০টি গরুর হাট বসবে। সব মিলিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি।’