রাজশাহীতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পালাতে গিয়ে হাসপাতালে তরুণ

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মালোপাড়ার এই ফাঁড়ি থেকে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন এক তরুণ। বুধবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পালানোর সময় উঁচু ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক তরুণ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের বোয়ালিয়া মডেল থানার মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ওই তরুণের নাম নাইমুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ (২০)। তাঁর বাড়ি নগরের কাদিরগঞ্জ দড়ি খরবোনা এলাকায়। তাঁকে দুপুরে এক পুরিয়া (১০ গ্রাম) হেরোইনসহ আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে আনা হয়। ভবন থেকে পড়ে নাইমুল কোমর, হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে নগরের দড়ি খরবোনা এলাকা থেকে ১০ গ্রাম হেরোইনসহ নাইমুলকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তাঁকে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পাঁচতলায় আনা হয়। সেখানে তাঁকে একটি কক্ষে রেখে পুলিশের একজন সদস্য তাঁর নাম–ঠিকানা লিখছিলেন। তখন রায়হান নামের এক পুলিশ কনস্টেবলের কাছে পানি খেতে চান নাইমুল। তিনি পানির ব্যবস্থা করতে গেলেই নাইমুল ওই কক্ষ থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন নিচের একটি টিনের ছাপড়ার ওপরে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

বিকেলে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটি পাঁচতলা। ভবনটির প্রত্যেক তলার জানালা লোহার গ্রিলে ঘেরা। পাঁচতলায় ছাদ। ছাদের পাশেই একটি বেলকনি। এই জায়গা দিয়েই নাইমুল রেলিং ধরে নিচে নামার চেষ্টা করেন বলে পুলিশের ধারণা।

পুলিশ কনস্টেবল রায়হান বলেন, নাইমুল এমনভাবে পানি চাচ্ছিলেন যে তাঁকে পানি পান করানো খুব দরকার মনে হয়েছিল। তিনি পানির ব্যবস্থা করতে যেতেই নাইমুল ভবন থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তাঁর এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।

নাইমুলের মা মাসতারা বেগমের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়। তিনি বলেন, সকাল ১০টার পর থেকে তিনি আর তাঁর ছেলেকে দেখেননি। পরে জানতে পারেন, একটি ভবন থেকে পড়ে ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি আরও বলেন, ছেলে মাদক সেবন করেন। টাকার জন্য সব সময়ই জ্বালাতন করেন। এ জন্য তিনি হাসপাতালে যাবেন না। পরে সন্ধ্যায় ছেলেকে দেখতে তিনি হাসপাতালে গেছেন বলে জানা গেছে।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুপুরে হেরোইনসহ ওই তরুণকে আটক করে পুলিশ। এরপর ফাঁড়িতে নিয়ে নাম-ঠিকানা লেখার সময় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে নাইমুল এত ওপর থেকে লাফিয়ে পড়েননি। তাঁর ধারণা বেলকনি হয়ে ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামার সময় একতলা টিনের ছাপড়ার ওপর পড়ে যান। হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।