রাজশাহীতে সম্প্রীতির ইফতার

রাজশাহীতে হিন্দু–মুসলমান-খ্রিষ্টান সম্প্রীতির ইফতার। আজ বুধবার রাজশাহী খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীর খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের শত বছরের ইতিহাসে এবার প্রথমবারের মতো ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। আজ বুধবার হাসপাতাল–সংলগ্ন নার্সিং ইনস্টিটিউট চত্বরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এতে শুধু ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাই অংশ নেননি। সম্প্রীতির এ ইফতার আয়োজনে অংশ নেন হাসপাতালটিতে কর্মরত হিন্দু, মুসলমান ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এই আয়োজনে সারা বিশ্বের মানুষের করোনামুক্তির জন্য দোয়া করা হয়।

রাজশাহীর খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালটি একটি শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান। হাসপাতালের সঙ্গেই রয়েছে খ্রীষ্টিয়ান মিশন নার্সিং ইনস্টিটিউট। দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিকিৎসক-নার্সদের মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিম ধর্মের অনুসারী। তাঁদের সম্মানে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এই আয়োজন এই হাসপাতালে এবারই প্রথমবার।

সম্প্রীতির ইফতার আয়োজনে অংশ নেন হাসপাতালটিতে কর্মরত হিন্দু, মুসলমান ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

নার্সিং ইনস্টিটিউট চত্বরে আয়োজিত এই ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন হাসপাতালের সব কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও নার্সরা। এতে নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন জেলার পবার দারুসা মসজিদের ইমাম মাওলানা তবিবুর রহমান। তিনি মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি বজায় থাকা ও সারা বিশ্বের মানুষের করোনামুক্তির জন্য দোয়া করেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ চাঁদ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে কাজ করি। মুসলমান সহকর্মীদের সম্মানার্থেই এই আয়োজন। খ্রিষ্টান, হিন্দু আমরা সবাই এতে অংশ নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমাদের সবার সঙ্গে সবার সুন্দর সম্পর্ক হবে।’

সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। সহকর্মীদের সম্মানে এমন আয়োজন সত্যিই ভালো লাগছে। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করব এটাই তো মানব ধর্ম।
সলতা দ্র, খ্রীষ্টিয়ান মিশন নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ

খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের লোকাল ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি লরেন্স মণ্ডল বলেন, ‘আমরা সবাই সহকর্মী। ধর্ম আলাদা হতে পারে, কিন্তু সবার পরিচয় মানুষ। এই চিন্তাটা ধারণ করলে সবার মধ্যে সম্প্রীতি থাকবে। আমরা এক কাতারে সব কাজ করতে পারব। কোনো হানাহানি ঘটবে না। এই প্রথম এখানে ইফতার হলো। প্রতিবছরই যেন হয়, সেই প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে।’

অনুষ্ঠানে খ্রীষ্টিয়ান মিশন নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সলতা দ্রং বলেন, ‘সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। সহকর্মীদের সম্মানে এমন আয়োজন সত্যিই ভালো লাগছে। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করব এটাই তো মানব ধর্ম।’