রায়পুরায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ ১৪

হামলার সময় গুলজার গ্রুপের সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আজ সোমবার ভোরে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরায় বালু ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১২ জন গুলিবিদ্ধ ও ২ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। আজ সোমবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ও টেঁটাবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন রায়পুরার আমিরগঞ্জের নলবাটা এলাকার আবদুল মোতালিবের ছেলে মো. মোহসিন (২০), আওলাদ হোসেনের ছেলে রিমন হোসেন (১০), নুরে আলমের ছেলে মো. মুন্না মিয়া (১২), আফাজউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (৩৪), শাজাহান মিয়ার ছেলে শাহালম মিয়া (৩০), আবদুল মিয়ার ছেলে খোরশেদ মিয়া (৪৫), ইদ্রিস আলীর ছেলে ইলিয়াস আলী (৫০), ইমান হোসেনের ছেলে আশিক হোসেন (২৩), মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে মোতালিব (৭০), জুয়েল মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩২), আবদুল হাকিমের ছেলে ছাত্তার (৫০), আবুল হোসেনের স্ত্রী রোফেজা বেগম (৩২), মোক্তার হোসেনের ছেলে শাহীন মিয়া (১৬)। আহত ব্যক্তিদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে তাঁদের সবাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি সদস্য গুলজার হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে রবির বালুর ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তাঁদের দ্বন্দ্বের জেরে কিছুদিন পরপরই এই গ্রামে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরেই আজ ভোরে রফিকুল ইসলামের সমর্থকেরা গুলজার হোসেনের সমর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিতে হামলা চালান।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রায়পুরার আমিরগঞ্জের নলাবাটা গ্রামে রবি গ্রুপ ও গুলজার গ্রুপের বিরোধ চলছে। গত কয়েক বছরে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত মাসেও একাধিকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আজ ভোর ৫টার দিকে রবি গ্রুপের শতাধিক সমর্থক আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে গুলজার গ্রুপের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে নারী, শিশুসহ ১৪ জন আহত হন।

গুলজার গ্রুপের সমর্থকদের বাড়ির বিভিন্ন আসবাব ভেঙে ফেলা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে রায়পুরার আমিরগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল কাদের বলেন, আজ সকাল পৌনে ৬টার দিকে রায়পুরার নলবাটা এলাকার নারী, শিশুসহ মোট ১৪ জন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এর মধ্যে ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং ২ জন টেঁটাবিদ্ধ ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের সবাইকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে রফিকুল ইসলাম ও গুলজার হোসেন উভয়ের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দুজনেরই ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। আহত ব্যক্তিরা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।