লালপুরে টিকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় হাসপাতালে ভাঙচুর করল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

নাটোরের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। শনিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

করোনার টিকা নিতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সিরিয়াল না আসায় নাটোরের লালপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আজ শনিবার সকালে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ কে এম সাহাব উদ্দিন বলেন, আজ লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ৪৫৮ জন, লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ৬৭০ জন, বালিতিতা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ২৬১ জন, লালপুর থানা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ১৬২ জন এবং বালিতিতা ফাজিল মাদ্রাসার ৮০ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার তারিখ ছিল আজ। সকাল ৯টা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলরুমে ১২-১৮ বছরের স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল থেকেই হাসপাতাল চত্বরে শিক্ষার্থীরা ভিড় করতে থাকে। ফলে লাইন বড় হয়ে যায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের সভাকক্ষের দরজা ও কাচ ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে লালপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলে, সে সকাল নয়টা থেকে টিকার জন্য লাইনে দাঁড়ায়। অথচ দুপুর পৌনে ১২টার সময়ও সে টিকা নিতে পারেনি। তার মতো অনেকেই এমন অবস্থার মধ্যে পড়ে। সে জানায়, চারজন স্বাস্থ্যকর্মী একটি কক্ষে ছাত্রছাত্রীদের একত্রে টিকা দিচ্ছিল। এ কারণে বিলম্ব হচ্ছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কেউ কেউ দরজায় লাথি মেরে কাচ ভাঙচুর করে।

উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের সভাকক্ষের দরজা ও কাচ ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে লালপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকা না পেয়ে অনেকে বিক্ষোভ করতে শুরু করে। এর একপর্যায়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার সাহা বলেন, তাড়াহুড়ো করে ৬৭০ জনকে টিকার জন্য তালিকা দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে দিলে ভালো হতো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় প্রথম দিনে টিকাদানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আর সমস্যা হবে না বলে আশা করেন তিনি।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ভিড় করায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, প্রথম দিন বুঝতে না পারায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ জনের টিকা কার্যক্রমের সুবিধা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দেওয়া হয়।