লেগেই আছে যানজট, চরম ভোগান্তিতে ঘরমুখী মানুষ

যানবাহনগুলো দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে আছে একই জায়গায়। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর জসিমউদদীন রোড এলাকায়।ছবি: আল-আমিন

শঙ্কা ছিল কঠোর বিধিনিষেধ-পরবর্তী সময়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখী মানুষের চাপ বাড়বে। সড়কের গর্ত ও খানাখন্দে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়ে ভোগান্তিতে পড়বে হাজারো মানুষ। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর ছয় দিন ধরে হচ্ছেও তাই। এর মধ্যে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত সড়কটিতে লেগে আছে তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদে ঘরমুখী হাজারো মানুষ।

সড়কটির বিমানবন্দর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গর্ত ও খানাখন্দে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখে গত ১৯ জুন পরিদর্শনে আসেন সেতু বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক ও সড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম। এ সময় তাঁরা তিন দিনের মধ্যে রাস্তাটি মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। এ কারণে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর থেকেই সড়কটিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ।

সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ বলছে, সড়কটির গাজীপুর অংশে প্রচুর গর্ত-খানাখন্দ বা কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন অংশে লেন সংকুচিত হয়ে পড়ায় কোনো গাড়িই রাজধানী থেকে বের হতে পারছে না। এতে যানজট তৈরি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ।

পুলিশের ভাষ্য, লকাডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকেই সড়কটিতে মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকেই সড়কটিতে লেগে থাকছে যানজট। এর মধ্যে ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে চাপ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। গতকাল সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর কাকলী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত লেগে আছে যানজট। এতেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে রাজধানীর উত্তরা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, গাজীপুর অংশে বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। কাজ করতে গিয়ে কোথাও ফেলে রাখা হয়েছে ইট, বালু, সিমেন্ট বা অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী। যত্রতত্র গর্ত-খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে সংকুচিত হয়ে পড়েছে লেন। এ কারণে কোনো যানবাহনই ঠিকমতো চলাচল করতে না পারছে না। এতে যানজট লেগে গেছে পুরো সড়কে।

আজমপুর এলাকায় দেখা যায় যানবাহনের লম্বা লাইন। পদচারী–সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে যত দূর চোখ যায়, যানবাহনের স্থির অবস্থা দেখা যায়। যানবাহনগুলো চলাচল করতে না পারায় যাত্রীরা চরম বিরক্ত হচ্ছে। কেউ কেউ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাচলা করছে, আবার গাড়িতে উঠছে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে দেখা যায় চরম বিরক্তি ভাব।

ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের যাত্রী সুইটি আক্তার বলেন, ‘দীর্ঘ সময় অপেক্ষা শেষে রাত দুইটার সময় গাড়িতে উঠছি। এর মধ্যে মাত্র এ পর্যন্ত আসছি। বাকি রাস্তা কীভাবে যাব, কখন যাব, তার কিছুই বুঝতে পারছি না।’

যানজটের প্রভাব পড়তে দেখা গেছে আবদুল্লাহপুর মোড় থেকে ঢাকা-সিরাজগঞ্জ সড়ক, টঙ্গীর কামারপাড়া সড়ক ও টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কে। যানবাহনের ধীরগতির কারণে এই সড়কগুলোতেও যানবাহন চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়।

আবদুল্লাহপুর পুলিশ বক্সের পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘গাজীপুরে গাড়ি ঢোকাতেই পারছি না। এ কারণে যানজট চলে গেছে কাকলী পর্যন্ত। এসব কারণে আশপাশের সড়কগুলোয় যান চলাচল করতে পারছে না। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য।’