লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

কুপিয়ে জখম
প্রতীকী ছবি

নড়াইলের লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মো. তাইজুল ইসলামকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করেছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণডাঙা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তাইজুল ইসলাম (৪৬) ব্রাহ্মণডাঙা গ্রামের আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। তিনি নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, ব্রাহ্মণডাঙা খালপাড়া এলাকায় তাইজুল ইসলামের নিজের মাছের ঘের আছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে কুপিয়ে জখম করেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়েছে।

নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. মিজানুর রহমান জানান, তাইজুল ইসলামের পুরোপুরি জ্ঞান নেই। তাঁর শরীরের আঘাত গুরুতর। অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বজনেরা তাঁকে খুলনার দিকে নিয়ে গেছেন।

আহত তাইজুল ইসলাম (৪৬) অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। তিনি নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন।

আহত তাইজুলের চাচাতো ভাই মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব রয়েছে। ইউপি নির্বাচনে তাঁদের পক্ষের ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন মো. আশরাফুল মোল্লা। প্রতিপক্ষের প্রার্থী ছিলেন মো. হুমায়ূন মোল্লা। হুমায়ূন মোল্লা বিজয়ী হওয়ার পর ভয়ে বাড়িছাড়া ছিলেন তাইজুল। কিছুদিন আগে বাড়িতে এলেও হামলার ভয়ে গা-ঢাকা দিয়ে থাকতেন। আজ হঠাৎ করেই নিজের মাছের ঘেরে যান। সেখানেই প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের নেতা বর্তমান ইউপি সদস্য মো. হ‌ুমায়ূন মোল্লার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সন্ধ্যায় ফোন খোলা পাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি আমার পক্ষের ছেলেপেলেরা কুপিয়েছে। তাদের সঙ্গে এখনো কথা হয়নি। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারবানি যে কেন কুপিয়েছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও নোয়াগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফয়জুল হক প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এক বছর আগে তাইজুল ও তাঁর লোকজন প্রতিপক্ষের মাহাবুর মোল্লাকে (৪২) কুপিয়েছিলেন। মাহাবুর পঙ্গু হয়ে গেছেন। ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটতে হয় তাঁকে। ওই ঘটনার প্রধান আসামি তাইজুল। শুনেছি, প্রতিপক্ষের তিনজন যুবক তাইজুলকে কুপিয়েছেন।’

এ ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোহাগড়া থানা-পুলিশের বিট কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফিরোজ ইকবাল শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাইজুল ইসলামকে কুপিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ আটক হননি। এলাকায় পুলিশ টহলে রয়েছে।