লোহাগড়ায় নৌকার প্রার্থী পেলেন ১১৮ ভোট, দুই বিদ্রোহীর ঘরে ৯৯ শতাংশের বেশি ভোট
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এস এম আনিছুজ্জামান নৌকা প্রতীক নিয়ে মাত্র ১১৮ ভোট পেয়েছেন। এ ইউপিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম কামরুল। তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ২৬২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী মো. দাউদ হোসেন পেয়েছেন ৮ হাজার ১৭৫ ভোট। লাহুড়িয়া ইউপিতে এই তিনজনই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ওই ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এস এম আনিছুজ্জামান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য। দ্বিতীয় হওয়া বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দাউদ হোসেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর বিজয়ী এস এম কামরুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এ ছাড়া তিনি বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শিকদার আবদুল হান্নানের ছেলে। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এস এম কামরুল ও দাউদ হোসেন দুজনকেই ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তিন প্রার্থীই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
আনিছুজ্জামান মূলত এলাকায় থাকেন না। মানুষের সুখে–দুঃখে পাশে না থাকলে জনগণ তাঁকে কীভাবে পছন্দ করবেন?
গতকাল রোববার চতুর্থ ধাপে উপজেলার ১২টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় লোকজন জানান, পুরো ইউনিয়নের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে শিকদার আবদুল হান্নান ও তাঁর ছেলে বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম কামরুল। অন্য পক্ষের নেতৃত্বে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দাউদ হোসেন। এই দুটি ধারার বাইরে কোনো নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি।
লাহুড়িয়া ইউপির মোট ভোটার ২০ হাজার ৬৮৯ জন। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১৬ হাজার ৭৩৬টি (৮০ শতাংশের কিছু বেশি)। এর মধ্যে বৈধ ভোট ১৬ হাজার ৫৫৫টি, ১৮১টি ভোট বাতিল হয়েছে। বৈধ ভোটের মধ্যে দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মিলে পেয়েছেন ৯৯ শতাংশের বেশি ভোট। নৌকার প্রার্থী ১ শতাংশ ভোটও পাননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী এস এম আনিছুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁকে কোনো সহযোগিতা করেননি। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও কোনো ভূমিকা রাখেননি। নির্বাচন সামনে রেখে সব ইউনিয়নে দলের বর্ধিত সভা হলেও লাহুড়িয়া ইউনিয়নে হয়নি। এ জন্যই এই পরাজয়।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আবদুল হান্নান বলেন, আনিছুজ্জামান মূলত এলাকায় থাকেন না। মানুষের সুখে–দুঃখে পাশে না থাকলে জনগণ তাঁকে কীভাবে পছন্দ করবেন?