শরীয়তপুরে কোভিড আক্রান্ত ৮৬ শতাংশই সুস্থ

শরীয়তপুর জেলায় কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৮৬ শতাংশ সুস্থ হয়েছেন। বেশির ভাগই সুস্থ হয়েছেন বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৪৮৪ জন। সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২৭৪ জন।


জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে গত ১৩ এপ্রিল প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। জুন মাস থেকে এ সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। মোট আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার প্রায় ৮৬ শতাংশ। মারা গেছেন ১৪ জন।

করোনাভাইরাস শনাক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ২০ শয্যার কোভিড ইউনিট ও সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ শয্যার কোভিড ইউনিট চালু করে। তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তির প্রবণতা ছিল খুবই কম। অধিকাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে করোনাভাইরাসমুক্ত হয়েছেন।

তাঁরা চিকিৎসা নিয়েছেন বাড়িতে
শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের ৯ সদস্যের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৩ আগস্ট। বাড়িতে থেকে তাঁরা সুস্থ হয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের আমরা ৯ সদস্য আক্রান্ত হই। প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও পরে স্বাভাবিক হই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়েছি।’


গোসাইরহাট সরকারি শামছুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হকের পরিবারের সদস্য ও স্বজনসহ ৩৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তাঁরা সবাই এখন সুস্থ। তিনিও সুস্থ হয়ে গত শুক্রবার কলেজে যোগ দিয়েছেন।


ফজলুল হক বলেন, ‘ শুরুতে করোনাভাইরাস নিয়ে একধরনের ভীতি ছিল। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা একে একে আক্রান্ত হতে থাকলে মনে সাহস সঞ্চয় করি। বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছি।’

নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ির পরিবারের ৮ সদস্য ১ আগস্ট কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হন। গতকাল শনিবার তিনি করোনাভাইরাসমুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার তিনি পৌরসভার কাজে যোগ দিয়েছেন।


শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ি বলেন, ‘পরিবারের বয়স্ক ও শিশুদের জন্য দুশ্চিন্তা ছিল। করোনাকালে মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিলাম। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় বাড়িতে বসেই করোনা জয় করেছি।’


শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, শরীয়তপুরে কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত ব্যক্তিরা খুব একটা হাসপাতালে আসেননি। যাঁরা একটু বয়স্ক ও একটু সমস্যা বোধ করেছেন, তাঁরা হাসপাতালে এসেছিলেন। আর অন্যরা টেলিমেডিসিন সেবা নিয়ে ঘরে বসেই সুস্থ হয়েছেন।


তিনি জানান, স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সব সময় আক্রান্তদের মুঠোফোনে ও সশরীরে সেবা দিয়েছেন। এখন জেলায় ১৯৬ জন আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন।