শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘যে ভিসি (উপাচার্য) বুলেট মারে, সে ভিসি চাই না’, ‘ছাত্রসমাজ এক হও, লড়াই করো’, ‘আমার ক্যাম্পাস ছেড়ে দাও, পুলিশ তুমি বাড়ি যাও’, ‘ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই, করতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

কর্মসূচিতে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আবদুল মজিদ বলেন, এই হামলার সঙ্গে যে সন্ত্রাসী সংগঠন, পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। আর কেউ যেন শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো মহল আঙুল তুলতে না পারে, শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দিতে না পারে, শিক্ষার্থীদের ওপর চোখ রাঙাতে না পারে।

রাবি শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা স্বৈরাচারের সহায়ক ভূমিকা একনিষ্ঠভাবে পালন করছেন। এখন যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নীলচাষি, আর প্রশাসন হচ্ছে ইংরেজ। নীলচাষিদের ব্রিটিশরা যে রকম নির্যাতন করত, সে রকমভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা সব সময় সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছেন। সেই ভূমিকা যেন অক্ষুণ্ন থাকে, সে জন্য সবার এক হয়ে কাজ করতে হবে।

ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, ক্যাম্পাসে উপাচার্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ অভিভাবক। সেই অভিভাবকের মদদে যখন পুলিশ বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়, তখন বুঝে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কোথায়। উপাচার্যের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশ বাহিনী ছাত্রসমাজের ওপর হামলার মতো ন্যক্করজনক কাজ করেছে। তাঁরা শুধু দায়িত্ব নিয়ে পড়ে থাকেন, শিক্ষার্থীদের বিষয় নিয়ে ভাবেন না।

প্রসঙ্গত, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার বেলা পৌনে তিনটার দিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তাঁর কার্যালয় থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তখন পুলিশ শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।