শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনকারী এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন চলছে। অনশনে থাকা কাজল দাস নামের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান সতীর্থরাছবি: আনিস মাহমুদ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশন করা এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাজল দাস নামের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে আমরণ অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী। সেই থেকে তাঁরা উপাচার্যের বাসার সামনেই আছেন। শীতের মধ্যে তাঁরা গতকাল সারা রাত সেখানেই ছিলেন। রাতে কাজলের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এ ছাড়া তাঁর রক্তচাপ কমে যায় বলে সতীর্থরা জানিয়েছেন।

সিলেটের যে হাসপাতালে কাজল দাসকে নেওয়া হয়েছে, সেখানকার চিকিৎসক বাবলু হোসেন বলেন, জ্বর ও রক্তচাপ কমে যাওয়ায় তাঁর অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছিল। তাই দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাসরাবা সুলতানার নেতৃত্বে একদল স্বাস্থ্যকর্মী আন্দোলনস্থলে উপস্থিত আছেন। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাঁদের কাছে চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করেছেন। মাসরাবা সুলতানা বলেন, চিকিৎসা সহায়তার জন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনস্থলের পাশেই থাকবেন তাঁরা।

এ আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়।

অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তাদের সেবাযত্ন করছেন সহপাঠীরা
ছবি: আনিস মাহমুদ

পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।