শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনা ’৭১ এর পাশের অপরিষ্কার খালে মশা জন্মাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

শ্রেণিকক্ষ থেকে প্রশাসনিক ভবন কিংবা আবাসিক হল—সবখানেই মশার যন্ত্রণা। মশার কামড়ে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় তাঁরা নিয়মিত মশকনিধনের ওষুধ ছিটানোর দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে বৃষ্টি হওয়ায় ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন বিভিন্ন অবকাঠামোতে পানি জমেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক আগাছা ও আবর্জনায় পরিপূর্ণ। নালানর্দমাগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ক্যাম্পাসের একটি পরিত্যক্ত খালে গাছের পাতা আটকে থাকায় পানিতে ময়লা জমে গেছে। এসব স্থানই মূলত মশার প্রজননক্ষেত্র। মশার উপদ্রবে হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের থাকাই দায় হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০০৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রিয়াজ আহমেদ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

৩২০ একরের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দাপ্তরিক ও শিক্ষা ভবন ছাড়াও ৫টি আবাসিক হল, ১টি করে অতিথি ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা কোয়ার্টার ও কর্মচারী কোয়ার্টার রয়েছে। এর বাইরে অস্থায়ী আবাসনব্যবস্থা হিসেবে কর্মচারীদের জন্য রয়েছে ছয়টি টিনশেড ঘর। পুরো এলাকায় মশা নিধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ফগার মেশিনও পর্যাপ্ত নেই বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

শাহপরান হলের সি–ব্লকের ৪২৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বলেন, মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলায়ও মশারি অথবা কয়েল ব্যবহার করতে হয়। প্রতিনিয়ত এভাবে মশার কয়েল ব্যবহার করলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। আর যেভাবে মশা কামড়াচ্ছে, তাতে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

আরেক শিক্ষার্থী সাঈদা সিদ্দিকা বলেন, হলে আগের চেয়ে মশা বেড়েছে। মাঝেমধ্যে ওষুধ ছিটানো হলেও মশা কমছে না। মশার যন্ত্রণা থেকে কেউই রক্ষা পাচ্ছে না।

শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা দিনেও কয়েল জ্বালিয়ে অথবা মশারি টাঙিয়ে পড়াশোনা করেন। সন্ধ্যার পর এ উৎপাত বেড়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলচত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে মশার উপদ্রবে শিক্ষার্থীরা বসতে পারেন না। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০০৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রিয়াজ আহমেদ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, মশকনিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরপর ফগার মেশিন দিয়ে হলের আশপাশের এলাকায় ওষুধ ছিটানো হয়েছে। হলের আশপাশের ময়লা ও ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মশকনিধনের ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। প্রতি সপ্তাহেই ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওষুধ ছিটানো হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফগার মেশিনের সংকট আছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফগার মেশিন প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয় বলে জানান তিনি।