শাহি জর্দা, জামাই জিলাপির কদর

বরিশালের ইফতারির বাজারে জনপ্রিয় শাহি জর্দা। ছবিটি নগরের বগুড়া রোড থেকে তোলা l প্রথম আলো
বরিশালের ইফতারির বাজারে জনপ্রিয় শাহি জর্দা। ছবিটি নগরের বগুড়া রোড থেকে তোলা l প্রথম আলো

শুক্রবার বেলা আড়াইটা! বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে একটি হোটেলের সামনের ফুটপাতে শাহি জর্দা, জিলাপিসহ নানা ইফতারসামগ্রী সাজানো। হোটেলকর্মী রুবেল সিকদার হ্যান্ডমাইকে হাঁকছেন, ‘এক কেজি কালাভুনা কিনলে দুইটা শাহি পরোটা ফ্রি। আসুন, রোজার বাহারি ইফতারসামগ্রী কিনুন।’

একটু দূরে নাজেমস ইফতারসামগ্রীর অস্থায়ী ঘর। সেখানে কোনো হাঁকডাক নেই। তারপরও মানুষের ভিড়। সামনে রিকশা, গাড়ি, ইজিবাইক সামাল দিতে ব্যক্তি উদ্যোগে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ভেতরে কমপক্ষে ৫০ জন কর্মী ইফতারসামগ্রী দিয়ে কুলাতে পারছেন না। ইফতারির সঙ্গে এক প্যাকেট শাহি জর্দা নিচ্ছেন প্রায় সব ক্রেতা। অন্যান্য ইফতারি বিক্রেতার কাছেও শাহি জর্দা পাওয়া যায়। তবে নাজেমসের তৈরি শাহি জর্দা সবার পছন্দ। এরপর চাহিদায় আছে জামাই জিলাপি।

নাজেমস ইফতার হাউসের ফরিদুর রহমান বললেন, ‘আমাদের তৈরি কোনো ইফতারসামগ্রী অবিক্রীত থাকে না। সন্ধ্যার আগেই সব বিক্রি হয়ে যায়। তবে শাহি জর্দা বিকেল পাঁচটার পর আর পাওয়া যায় না। দিনে দুই মণ জর্দা বিক্রি হয়। প্রতি কেজি জর্দা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরপরই বিক্রি বেশি হয় ৫০০ গ্রাম ওজনের জামাই জিলাপি।’

ষাটের দশকে মো. নাজেম আলী পাচক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু নাজেম আলী ইফতারের বাজারে আসেন ১৭ বছর আগে। এখন তাঁর ছেলে ফরিদুর রহমান ইফতার ঘরটি পরিচালনা করেন। শুধু রোজার এক মাস ইফতার আয়োজনের জন্য অস্থায়ীভাবে দোকানটি চালান তাঁরা।

বেলা দুইটার পর থেকে নগরের ইফতার বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে বনেদি ও স্বাদে-গন্ধে আভিজাত্যে আকৃষ্ট করার মতো দোকানের সংখ্যা বেশি নয়। নগরের অভিজাত ইফতারির দোকানগুলোতে ছানার পোলাও, পুয়াপিঠা, শাহি জিলাপি, চিকেন কাবাব, চিকেন পুলি, ফিরনি, কুলফি সমুচা, শাহি চপ, পাটিসাপ্টা, পাকন পিঠা, গরুর কালাভুনা ও নানা পদের কাবাব পাওয়া যায়। বগুড়া রোডে ইফতারি কিনতে আসা রুবা তাসনিম বলেন, ‘ছেলের পছন্দ চিকেন কাবাব, চিকেন পুলি। তার সঙ্গে শাহি জর্দা কিনলাম।’ দোলোয়ার হোসেন নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, মুরগি-মোছল্লামের সঙ্গে শাহি জর্দা আর জামাই জিলাপি কিনেছি।’