শাহ আবদুল করিমকে দেওয়া জমি ৫৭ বছরেও পায়নি পরিবার

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল গ্রামের খলিল চৌধুরীর পরিবার বাধা দেওয়ায় তাঁরা জমির দখল পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম ভূমিহীন ছিলেন। এ কারণে ৫৭ বছর আগে সরকার তাঁকে ২ একর ১১ শতক জমি স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দিয়েছিল। কিন্তু এলাকার একটি পক্ষের বাধার কারণে এই জমির দখল করিম জীবদ্দশায় পাননি। এই দুঃখ তিনি একটি গানেও বলে গেছেন। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর একমাত্র ছেলে শাহ নূর জালাল জমি দখলের সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জমির দখল পেতে শাহ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন, শিগগিরই শাহ আবদুল করিমের পরিবারকে ওই জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

শাহ নূর জালালের লিখিত আবেদন ও তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহ আবদুল করিমের বাড়ি দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামে। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করিমের প্রিয় নদী কালনী। নদীর উত্তর পারে উজানধল এবং দক্ষিণ পারে জালালপুর ও তাড়ল গ্রাম। বাউল করিমের নিজের কোনো জমি নেই। এ অবস্থায় ১৯৬৪ সালে প্রশাসন জালালপুর গ্রামের পাশে জালালপুর মৌজায় তাঁকে ২ একর ১১ শতক জমি স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেয়। এই জমি তাঁর নামে রেকর্ড হয়েছে। শুরু থেকেই তাঁরা জমির খাজনাও পরিশোধ করছেন। কিন্তু যখনই জমির দখলে যেতে চেয়েছেন, তখন বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তাড়ল গ্রামের বাসিন্দা খলিল চৌধুরীর পরিবার তাঁদের বাধা দিচ্ছে। ওই পক্ষ এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁরা জমির দখল পাচ্ছেন না।

জালালপুর গ্রামের দুজন বাসিন্দা জানান, শাহ আবদুল করিমকে যে জমি বন্দোবস্ত দিয়েছে, তা জালালপুর ও তাড়ল গ্রামের গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দুই গ্রামবাসীর দাবি ছিল, গবাদিপশু চড়াতে রাস্তা রেখে এক পাশে যেন আবদুল করিমকে জমি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে শাহ আবদুল করিমের ছেলে শাহ নূর জালাল বলেন, ‘জমি বন্দোবস্তের যাবতীয় কাগজপত্র, খাজনা জমা দেওয়ার রসিদ—সবই আমাদের আছে। শুধু জমির দখল নাই। বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু জমি দখল নিতে পারেননি। আমিও পারছি না। ’

খলিল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা করিমের পরিবারের জমি দখল করতে যাব কেন? এখানে আমাদের রেকর্ডীয় জমির সঙ্গে কিছু খাসজমিও আছে, যেগুলো আমরা ৫০ বছর ধরে ভোগদখল করছি। পাশেই অনেক জমি পতিত আছে। আমরা বলছি, সেখান থেকে যেন বাউল করিমের পরিবারকে জমি দেওয়া হয়। ’