শিক্ষকদের মানহানি ও হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশের সড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়
ছবি: শামসুজ্জামান

ঢাকার আশুলিয়ায় কলেজশিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যা এবং নড়াইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের মানহানির ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

আজ রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশের সড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতাহার হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন নীলাঞ্জন কুমার সাহা, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক তপন কুমার সাহা, অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন আহাম্মদ, সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা আক্তার, সহকারী অধ্যাপক সুমনা গুপ্তা প্রমুখ।

অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা এবং হত্যার মতো ঘটনা নৈতিকতা-মূল্যবোধের অবক্ষয়। সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সামনে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, কেউ তাকে কিছুই বলল না। এতে প্রমাণিত হয়, মানুষ আজ প্রতিবাদ করতে ভয় পায়।’ তিনি আরও বলেন, অন্যায়ের শাস্তির উদাহরণ নেই বলেই মানুষ এখন প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। শিক্ষক হত্যার ঘটনার পর ক্লাস শুরু করে শিক্ষকদেরই টহল দিতে হয়। ওই এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যের কথা সবাই বলছে, হত্যাকারীর সহযোগীও আছে, তাহলে তারা এখন কোথায়? তাদের গ্রেপ্তারে কেন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, এর চেয়ে ভয়ংকর আর কী হতে পারে?

অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, শিক্ষক হত্যা অথবা লাঞ্ছিত হওয়ায় ঘটনায় শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতার কথা বললে হবে না। এ ধরনের ঘটনা রোধে মনস্তাত্ত্বিক জগতের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, মারধরে শিক্ষকের মৃত্যুতে শুধু যে শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে, বিষয়টি এমন নয়। এর মধ্য দিয়ে চিন্তাচেতনার মৃত্যু হয়েছে। শিক্ষকদের মানহানি বা হত্যার ঘটনায় কোন নিয়ামকগুলো কাজ করেছে, সেগুলো চিহ্নিত করে, তা বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে।

যারা শিক্ষাগুরুকে লাঞ্ছিত করতে পারে, হত্যা করতে পারে, তারা কখনোই ছাত্র হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে লেখা হয়। ক্ষমতাকে সম্মান নির্ধারণের মাপকাঠি বানিয়ে ফেলা হয়েছে। মেধাকে পাশ কাটিয়ে যাদের ক্ষমতা আছে, তাদের সমাজে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, যা কখনোই কাম্য নয়।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

এদিকে রাজধানীর উত্তরায় গবেষক ও নাট্যকার অধ্যাপক রতন সিদ্দিকীর ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে পুরাতন কলা ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।