শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সিন্ডিকেট বৈঠক শেষ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আবারও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছে। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবনের সামনে
প্রথম আলো

১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া ছাড়াই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠক শেষ হয়েছে। বিষয়টি জানার পর শিক্ষার্থীরা গতকাল শুক্রবার রাত আটটা থেকে আবার আমরণ অনশন ও লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন। ফলে আবারও ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা শহরের শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১। আজ শনিবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনে চারজন অনশন আর শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন।

তাঁরা বলেন, গতকাল বিকেল চারটার দিকে ঢাকায় এ সিন্ডিকেট বৈঠক হয়। তবে ঢাকায় কোথায় বৈঠক হয়েছে, সে বিষয়ে জানা যায়নি। সেখানে টানা তিন ঘণ্টা বৈঠক চলার পর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বৈঠকটি শেষ হয়। বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী মুঠোফোনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানান। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতারা জরুরি বৈঠক করে আবারও আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন।

ফারহানা ইয়াসমিন
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর গতকাল বিকেলে এ সিন্ডিকেট বৈঠক ডাকা হয়।

এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন ১৪ ছাত্রের চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ফারহানার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন ও অনশন শুরু করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক ফারহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতিত ছাত্র, প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সাক্ষ্য দেন। তবে শিক্ষক ফারহানা সাক্ষ্য না দিয়ে ই-মেইলে দুই সপ্তাহের সময় চান। ১৪ দিন পার হলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। ফলে তাঁকে আর সময় না দিয়ে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আবু জাফর ও শামীম হোসেন বলেন, গতকালের সিন্ডিকেট বৈঠকে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাঁদের পরীক্ষার হলে ফিরে যেতে বলেন। শিক্ষার্থীরা এ আদেশ মানেননি। ফলে তাঁরা আবারও আন্দোলন শুরু করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আবার সিন্ডিকেটের সভা আহ্বান করা হবে। সেই সভায় শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।