শিবপুরে তরুণকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজন আটক

দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত মো. নাঈম মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর শিবপুরে মো. নাঈম মিয়া (২২) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিবপুর ও মনোহরদী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আজ বেলা তিনটার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান এসব তথ্য জানান।

আটক দুজন হলেন শিবপুরের আশুতিয়া এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে ফাহাদ রহমান (২১) ও আশ্রাফপুর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আজীম (২২)। আটকের সময় ফাহাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও একটি চাকু এবং আজীমের কাছ থেকে একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে সোমবার গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে নাঈম মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয়ে টুটুল (২০) নামের আরও এক তরুণ বর্তমানে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় নিহত নাঈমের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহত নাঈম মিয়া শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি শেখ রাসেল শিশু–কিশোর পরিষদ শিবপুর পৌর শাখার সভাপতি ছিলেন।

আরও পড়ুন

নাঈমের বন্ধু ও স্বজনেরা জানান, গতকাল বিকেলে শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে বন্ধুদের নিয়ে ইফতার করতে যান নাঈম। ওই বিদ্যালয়ে ঢোকার আগে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ইফতার শেষে নাঈম ও টুটুল বাড়িতে ফেরার পথে একদল দুর্বৃত্ত তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের শরীরে উপর্যুপরি কোপায় হামলাকারীরা।

নাঈম ও টুটুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে গুরুতর আহত টুটুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাহেব আলী পাঠান বলেন, স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় ১০-১২ জন স্থানীয় তরুণ-যুবক অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, আজ দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত নাঈমের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জানাজা ও দাফন শেষে নাঈমের পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে আসবেন বলে পুলিশ জানায়।