লাশ
প্রতীকী ছবি

সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামের হাসপাতালে নেওয়ার পথে কুলসুমা বেগম (৩০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলুল করিম।

নিহত কুলসুমা বেগমের বাড়ি সন্দ্বীপ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর স্বামীর নাম সাইফুল ইসলাম। কুলসুমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে সন্দ্বীপের বেসরকারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে কর্তৃপক্ষ।

সন্দ্বীপ বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক শরীফ সাইফ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোররাত ৪টার দিকে ওই রোগীকে তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের গাইনি বিভাগের চিকিৎসকেরা রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তখন ওই রোগীর পালস একদম কম ছিল। প্রেসার ছিল ৪০/৬০। পরে দ্রুত রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওই রোগীর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রথম সন্তান হয়েছিল। এ ধরনের রোগীর দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের সুপারিশ করে থাকেন। কিন্তু এই রোগীকে সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রোগীকে তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়। তাঁরা তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথের যাত্রীবাহী জাহাজ আইভি রহমানের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সকাল ৭টায় সন্দ্বীপ উপকূল থেকে ৫৬০ জন যাত্রী নিয়ে জাহাজটি ছেড়ে আসেন। এ সময় ওই রোগী জাহাজে ছিলেন। পরে রোগীকে প্রথম নৌকায় জাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু বেলা ১১টায় কুমিরা থেকে সন্দ্বীপের উদ্দেশে জাহাজটি ফেরার পথে আবার রোগীকে ঘাটে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি টিকিট কাউন্টার থেকে তাঁকে জানানো হলে রোগী পরিবহনের জন্য ১১টার জাহাজটি আরও ১৫ মিনিট দেরিতে ছাড়া হয়।

কুলসুমা বেগমের স্বামী সাইফুলের বরাত দিয়ে ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, সাইফুল তাঁকে জানিয়েছেন যে তিনি কুলসুমা বেগমকে নিয়ে প্রথমে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে নেন। এ সময় চিকিৎসক কুলসুমাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তিনি লাশ নিয়ে আবার সন্দ্বীপে যাওয়ার জন্য কুমিরা ঘাটে আসেন। ঘাট থেকে লাশটি নিয়ে লাল বোটে যাত্রা করেন। চলার পথে হঠাৎ বোটটি নষ্ট হয়ে যায়। পরে অন্য একটি লাল বোট দিয়ে রোগী বহনকারী লাল বোটকে টেনে জাহাজের কাছে এনে লাশটি তোলা হয়।

সন্দ্বীপে রোগীদের পরিবহনের জন্য কী ব্যবস্থা আছে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সম্রাট খীসা প্রথম আলোকে বলেন, ২৪ ঘণ্টা রোগী পারাপারের জন্য লাল বোট ছাড়া আর কোনো নৌযান বর্তমানে সন্দ্বীপে নেই। সি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারে একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, এই অঞ্চলে চলাচলের মতো সি অ্যাম্বুলেন্স সরকারের কাছে নেই।