সরাইলে বন্যার পানিতে খামারিদের হাহাকার

প্লাবিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পামশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রাম। আজ দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে দুটি ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আংশিক বিচ্ছিন্ন হয়েছে আরও চারটি ইউনিয়ন। অনেক খামারে বন্যার পানি প্রবেশ করায় খামারিরা বিপাকে পড়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে ২৪৬টি। এর মধ্যে ৯০টি হাঁস-মুরগির খামারে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব খামার থেকে হাঁস-মুরগি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেক খামারি অল্প মূল্যে তাঁদের হাঁস-মুরগি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আজ বুধবার অনেক স্থানে মাইকিং করে সস্তায় মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাড়ির ভেতরে–বাইরে চারপাশে বন্যার পানি থই থই করছে। আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পামশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

খামারিরা তাঁদের গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। উপজেলায় গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়ার খামার রয়েছে ৩৫৪টি। এর মধ্যে ৮০টি খামারে পানি প্রবেশ করেছে। অনেকেই কোরবানি ঈদ সামনে রেখে এসব গবাদিপশু পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁরা এখন এগুলো বিক্রি করতে পারছেন না। আবার গোখাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া গ্রামের মহিষ খামারি জয়নাল মিয়ার (৪৫) খামারে ছোট–বড় ২১টি মহিষ রয়েছে। তিনি তাঁর মহিষ নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা এলাকায়। সেখানেও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। জয়নাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত সোমবার স্থানীয় পশুর হাটে বিক্রির জন্য ১০টি মহিষ নিয়েছিলাম। একটিও বিক্রি হয়নি।’

সরাইল উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া গ্রামের খামারি জয়নাল মিয়া তাঁর ২১টি মহিষ নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা এলাকায়। আজ দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অনেকেই গবাদিপশু পালন করে থাকেন। বন্যার পানির কারণে তাঁরা এবার বিপাকে পড়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা প্রস্তুত করছি। তাঁদের সহায়তা করার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, এখানে পানিবন্দী ৩০০ পরিবারের জন্য ৩ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৪ হাজার ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে।