সাভারে বাসে ডাকাতির অভিযোগে যাত্রীদের পিটুনিতে আহত ব্যক্তির মৃত্যু

গণপিটুনি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার সাভারে চলন্ত বাসে ডাকাতির অভিযোগে দেশীয় অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন উত্তেজিত যাত্রীরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার সকালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর এলাকায় সেনা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম–পরিচয় এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।

সাভার ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাভার ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হেলাল উদ্দিন গতকাল রাতে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় ফিরছিলেন। তিনি সেনা কমপ্লেক্সের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলেন, পাশেই সাভার পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি হচ্ছে। তখন তিনি দৌড়ে বাসের কাছাকাছি গিয়ে দেখেন, যাত্রীদের অনেকেই বাসের জানালা দিয়ে লাফিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছেন। তিনি বাসে ওঠার পর দেশীয় ধারালো ছুরি হাতে বাসচালকের পাশে একজনকে দেখতে পান। এ সময় পেছন থেকে তিনি ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরেন।

হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরার সময়ও যাত্রী ও ব্যক্তির মধ্যে ধস্তাধস্তি চলছিল। এ সময় তিনি হাত ও মাথায় আঘাত পান। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই যাত্রীরা অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। এ সময় আরও অন্তত চারজনকে অস্ত্রসহ বাসের জানলা দিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যেতে দেখেন বলে দাবি করেন তিনি। তাঁদের পরনে কাফনের কাপড়ের মতো জামা ছিল।

পরে যাত্রীরা ওই ব্যক্তিকে ছুরিসহ আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশ আহত ওই ব্যক্তিকে প্রথমে ধামরাই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে ওই ব্যক্তিকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ সকাল নয়টার দিকে ওই ব্যক্তি মারা যান।

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. আসলামুজ্জামান প্রথম আলোক বলেন, ‘ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে যাত্রীরা গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে আমাদের হাতে তুলে দেয়। আজ মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। বাসের কোনো যাত্রী বা বাসের কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় প্রকৃত বিষয়টি বলা সম্ভব নয়। তদন্তের পরই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।’