সিরাজগঞ্জে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার

বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খান হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলাম। শুক্রবার সিরাজঞ্জ সদর থানা চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী মো. তরিকুল ইসলাম খানের হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম।  

গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলাম (২০) সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপারীপাড়ার টিক্কা ব্যাপারীর ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ সিরাজগঞ্জ সদর থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ সদর দপ্তর, ডিএমপি, সিআইডি ও পিবিআই এই কাজে সহযোগিতা করে। তদন্তের একপর্যায়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাহিদুল ইসলামকে আটক করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে তরিকুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন।

ছুরিকাঘাতে নিহত বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খান
ছবি: সংগৃহীত

এসপি হাসিবুল আলম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম খানের মূল হত্যাকারী জাহিদুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সিরাজগঞ্জ নিয়ে আসা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।

এসপি আরও বলেন, জাহিদুল ইসলাম পৌর নির্বাচনে অপর কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাদত হোসেন বুদ্দিনের সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনের তিন দিন আগে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া নিজ বাড়িতে আসেন। নির্বাচনের আগের দিন রাতে এক আসামির বাড়িতে তাঁর উপস্থিতিতে এজাহারভুক্ত ও অন্য আসামিরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে।

তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালানোর সময়ের কথা উল্লেখ করে এসপি হাসিবুল আলম বলেন, ফলাফল ঘোষণার আগে অন্য আসামিদের সঙ্গে গ্রেপ্তার জাহিদুল ইসলাম ছুরি নিয়ে শহীদগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়। সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে ফলাফল ঘোষণার সময় ডালিম প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অন্য আসামিদের সহযোগিতায় জাহিদুল বিজয়ী প্রার্থী তরিকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে সেখান থেকে চলে যান। এরপর তিনি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ছুরিটি লুকিয়ে রেখে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর এলাকার ভাড়া বাসায় চলে যান।

এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানের ছেলে একরামুল হাসান বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০–৪০ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে এসপি হাসিবুল আলম আরও বলেন, বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত ২৭ নম্বর আসামিকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।