সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা

সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্র সোমবার বিকেলে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করে সেনাবাহিনী, সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে বন্যার পানি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে প্রবেশ করতে থাকায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। শনিবার দুপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সঞ্চালন কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করতে হয়েছিল। তবে জেলা প্রশাসন, সিলেট সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় সেটি আবার চালু করা হয়। অবশেষে আজ সোমবার দুপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ত্বরিত সিদ্ধান্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ রোধ এবং উপকেন্দ্রের ভেতরের পানি সেচ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আজ বিকেলে কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সিলেট সেনানিবাসের মেজর খন্দকার মো. মুক্তাদির বন্যায় পরিচালিত কর্মসূচির বর্ণনা দেন। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র, বিদ্যুৎ বিভাগসহ অন্য সব সরকারি দপ্তর সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

অতীব জরুরি বিবেচনায় সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে কুমারগাঁও কেন্দ্রটি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়।

ব্রিফিংয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত, তবে আমরা নগরবাসী আরেকটি মহাসংকটের মধ্যে পড়ে যেতাম। আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ত। কেউ কারও কোনো খোঁজ নিতে পারতাম না। পানিবন্দী মানুষসহ নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যেত অনেকাংশে। তাই অতীব জরুরি বিবেচনায় সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে কুমারগাঁও কেন্দ্রটি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়। এই চেষ্টায় সিলেটের সব প্রশাসন দপ্তরসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্লাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঞ্চালন অব্যাহত রাখার উপযোগী অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়।’

এদিকে আজ সিলেটর অন্যান্য বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অস্থায়ী বেড়িবাঁধ দিয়ে সঞ্চালন উপযোগী করতে বরইকান্দির বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র করেছে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সেনাবাহিনীর একটি দল। সেগুলোতেও কুমারগাঁওয়ের মতো করে বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে সঞ্চালন উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। সেটি এখন ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। শাহজালাল উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতেও বাঁধ নির্মাণ করে পানি সেচ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। অন্যদিকে বরইকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রেও বাঁধ দিয়ে সেচ কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। আশা করছি, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারব।’

প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীন সিলেট বিভাগের ৪ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৩ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে।