হাওর-বন-পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটে প্রতিবছর অন্তত ২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। এ অঞ্চলের অসীম সম্ভাবনার এই পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে হলে পর্যটনবান্ধব সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
আজ রোববার বিকেলে সিলেট চেম্বার ভবনে প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টার আয়োজিত ‘টেকসই পর্যটন উন্নয়নে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডদের ভূমিকা: প্রেক্ষাপট সিলেট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব। সভা সঞ্চালনা করেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক ও পর্যটন সাবকমিটির আহ্বায়ক খন্দকার ইসরার আহমেদ। এতে অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়। সংস্থাটির প্রতিনিধিদল সিলেট অঞ্চলের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা সভায় তুলে ধরে।
প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদল সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে প্রতিবছর অন্তত ২৫ লাখ পর্যটকের যাতায়াত করার তথ্য তুলে ধরে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়।
অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব তৌফিক রহমান বলেন, প্রকৃতির টানে পর্যটকেরা সিলেট ছুটে আসেন, কিন্তু এখনো পর্যটকবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পর্যটকেরা অনেক ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকেন। সিলেটে দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাওয়ার সঠিক নির্দেশিকার অভাব, অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকা এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে পর্যটকেরা বিপদে পড়েন। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
পর্যটন খাতে বিরাজমান সমস্যা চিহ্নিত করার পর তা সমাধানে অ্যাসোসিয়েশন কাজ করছে উল্লেখ করে তৌফিক রহমান আরও বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সিলেটের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত দর্শনীয় স্থানে পর্যটকেরা যেসব সমস্যায় পড়ে থাকেন, সেগুলো চিহ্নিত করব। এরপর সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তা নিরসনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন হিসেবে সিলেট চেম্বারের সহায়তা দরকার।’
প্রকৃতিকন্যা সিলেটে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যা লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে। এসব দর্শনীয় স্থান দেশ ও দেশের বাইরে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে হবে। সিলেটের পর্যটন খাতের উন্নয়নে সিলেট চেম্বার সব সময় সহযোগিতায় থাকবে।
এ বিষয়ে সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, ‘পর্যটন সম্ভাবনাময় খাত। তবে করোনা মহামারির কারণে খাতটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হলে আমাদের সময়োপযোগী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। প্রকৃতিকন্যা সিলেটে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যা লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে। এসব দর্শনীয় স্থান দেশ ও দেশের বাইরে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে হবে। সিলেটের পর্যটন খাতের উন্নয়নে সিলেট চেম্বার সব সময় সহযোগিতায় থাকবে।’
ওই মতবিনিময় সভায় সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি চন্দন সাহা, সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ও হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন, হাবের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল কবির চৌধুরী, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশফাকুজ্জামান প্রমুখ অংশ নেন।