সিলেটে চেক প্রত্যাখ্যানের তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাহেদ করিমকে

সাহেদ করিম
ফাইল ছবি

করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে সিলেটে আরও তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার সকালে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক অঞ্জন কান্তি দাশ এই নির্দেশ দেন।

সিলেটের পাথর ব্যবসায়ীর তিনটি চেক প্রত্যাখ্যানের ঘটনায় করা মামলায় সাহেদ করিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া তাঁর নামে করা অপর একটি প্রতারণার মামলার তদন্ত করে পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলা চারটির বাদী সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী ও মাওলা স্টোন ক্রাশার মিলের (পাথর ভাঙার কল) মালিক শামসুল মাওলা। তাঁর বাড়ি সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্তে।

বাদীর আইনজীবী সিলেটের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আবদুস সাত্তার বলেন, সাহেদের বিরুদ্ধে আদালতে চারটি মামলা করেন শামসুল মাওলা। সাহেদের কাছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা আছে তাঁর। এই টাকার বদলে সাহেদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার তিনটি চেক দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনটি চেকই ছিল ভুয়া। মামলার বাদী টাকা পাননি। পরে তিনি মামলা করেন। এ ছাড়া অন্য একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ টাকার একটি চেকে পাথর কেনেন সাহেদ। এ জন্য আদালতে আরেকটি প্রতারণা, জালিয়াতি ও আত্মসাৎ মামলা করেন ব্যবসায়ী শামসুল। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জৈন্তাপুর থানা-পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সাহেদের বিরুদ্ধে পাথর ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা সর্বশেষ মামলাটি করেন ১১ ফেব্রুয়ারি। এতে একটি চেকে (চেক নম্বর ৯০২৬৪৬৩০) ১০ লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয় সাহেদের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৪ মার্চ সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম) আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার তিনটি প্রতারণা মামলা করেন শামসুল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সাহেদের দেওয়া ১০ লাখ টাকা করে দুটি চেকে ২০ লাখ টাকা ও আরও একটি চেকে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত সময়ে না পাওয়ায় তিনটি মামলা করেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৮ নভেম্বর সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্বিতীয়) আদালতের ওই তিন মামলার শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী সাহেদকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করলে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে ঢাকা থেকে মঙ্গলবার সাহেদকে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক তাঁকে তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সদস্য ছিলেন। গত বছরের ৬ জুলাই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া ও সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। পরদিন র‌্যাব বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরায় ভারতের সীমান্তের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।