সিলেটে ধর্মঘটের প্রথম দিনে ১৮ পয়েন্টে সমাবেশ

পণ্যবাহী যানবাহন ধর্মঘটের প্রথম দিনে বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা–কর্মীরা। বুধবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তেতলী এলাকায়।
প্রথম আলো

সিলেটের সব পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী যানবাহন ধর্মঘটের প্রথম দিন ১৮ পয়েন্টে সমাবেশ করেছে ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’।

আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল এবং পাথরসংশ্লিষ্ট সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণায় এই ধর্মঘট শুরু হয়। এর আগে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘট আহ্বান করে সংগঠনটি।

আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পণ্যবাহী যানবাহন ধর্মঘট চলাকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ সিলেট-তামাবিল ও সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ১৮টি পয়েন্টে সমাবেশ করেছে ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

সকালে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তেতলী বাইপাস সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রথম সমাবেশ হয়। সমাবেশে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক মালিক ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আবু সরকার, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ সাধারণ সম্পাদক পুলক কবির চৌধুরী, জেলা ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মো. আবদুস সালাম, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মো. আমির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ, এয়ারপোর্ট স্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির সভাপতি হাজি নাসির উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী, বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মো. নুরুল আমীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর ঐতিহাসিক বটতলা, ভোলাগঞ্জ, জাফলং এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সমাবেশ হয়। বক্তারা বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তে প্রায় এক বছর ধরে সিলেটের সব কটি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ আছে। মূলত পরিবেশ রক্ষার অজুহাতে একটি চক্রের ইন্ধনেই দেশীয় এই সম্পদ আহরণ বন্ধ রেখে নিম্নমানের বিদেশি পাথর আমদানি করা হচ্ছে। অথচ সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোর পাথরই দেশের নির্মাণশিল্পের অন্যতম প্রাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে বেকার হয়ে পড়েছেন পাথর আহরণ, বিক্রয় ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।
এসব সমাবেশে পাথরশ্রমিকদের সঙ্গে পাথর পরিবহনসংশ্লিষ্ট যানবাহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরাও সংহতি প্রকাশ করেন। ধর্মঘট চলার সময় সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ও সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে কোনো প্রকার পণ্যবাহী যান চলাচল করেনি। ভোলাগঞ্জ, জাফলং, জৈন্তাপুর ও বিমানবন্দর পাশের ধোপাগুল পাথর ভাঙার প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ছিল। শুক্রবার সকাল ছয়টার সময় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শেষ হওয়ার কথা আছে।

সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ ফয়েজ বলেন, ঐক্য পরিষদ মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ধারাবাহিকতায় প্রথম দফায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করছে। এ কর্মসূচির পরও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া না হলে ১৭ ডিসেম্বর পর্ববর্তী কর্মসূচিতে সিলেট বিভাগজুড়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে।