সিলেটে বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ৭ হাজারের বেশি পুকুরের মাছ

সিলেটের জকিগঞ্জে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসমুখে একটি ডাইক ভেঙে প্রবল বেগে ঢুকছে পাহাড়ি ঢল। এতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম। ছবিটি আজ শুক্রবার সকাল সোয়া নয়টায় উপজেলার অমলশিদ গ্রাম থেকে তোলা
ছবি : প্রথম আলো

সপ্তাহজুড়ে চলা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সিলেটে ৭ হাজার ২৫১টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলায় ৮ হাজার ৩২২টি পুকুরে খামারিরা মাছ চাষ করেছেন। এগুলোর মধ্যে ৭ হাজার ২৫১টি পুকুর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের মোট আয়তন ৮৫৪ দশমিক ৭০ হেক্টর। টাকার হিসাবে মোট ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় মাছ চাষি নেই বলে জানা গেছে।

মৎস্য কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে জকিগঞ্জ উপজেলায়। এখানে ৩ হাজার ১০০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এরপর বেশি ক্ষতি হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এখানে ভেসে গেছে ২ হাজার পুকুরের মাছ। অন্যান্য উপজেলার মধ্যে বিশ্বনাথে ১ হাজার ১৪০, সিলেট সদরে ৪৮০, কানাইঘাটে ১৮০, জৈন্তাপুরে ১১০ ও কোম্পানীগঞ্জে ৮০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বাকি উপজেলার মধ্যে গোলাপগঞ্জে ৫৯, বিয়ানীবাজারে ৪৮, বালাগঞ্জে ৪০ ও দক্ষিণ সুরমায় ১৪টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন মাছ ও ১২১ মেট্রিক টন পোনা ভেসে গেছে।

সপ্তাহখানেক ধরে সিলেট বিভাগে ভারতের উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। পাশাপাশি বিভাগজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার অন্য নদ-নদীর পানি উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অনেকের বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। বন্যার কারণে ইতিমধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বহু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছে।