সিলেটে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের উদ্যোগ

উজানে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরসহ ১৩টি উপজেলায় হু হু করে পানি বাড়ছে। নতুনভাবে আজ শতাধিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আজ দুপুরে নগরের কাজীরবাজার এলাকায়
ছবি: আনিস মাহমুদ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য করণীয় ঠিক করতে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জরুরি বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। বৈঠকে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের খাবার পানির সংকট দূর করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানি সংরক্ষণের জার সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় প্লাবিত এলাকায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে সভা শুরু হয়। শেষ হয় বেলা আড়াইটায়। জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে জেলা প্রশাসক বিয়ানীবাজার ও কানাইঘাট উপজেলার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যান।

বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জেলার প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আশ্রয়কেন্দ্র চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ২০–২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্লাবিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে জেলা প্রশাসন বৈঠক করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১২৮ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ থাকা পাঁচ লাখ টাকার খাবার কিনে স্থানীয়ভাবে বিতরণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যাপ্ত চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার সাদাত প্রথম আলোকে জানান, জেলার কমবেশি প্রতিটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। কতটি গ্রামের কত মানুষ পানিবন্দী আছেন, এটা এখনো জানা যায়নি। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। তবে প্লাবিত এলাকার মানুষ যেন দ্রুত দুর্ভোগ থেকে রেহাই পান, সেই অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসন দিনরাত কাজ করছে।